ইরানের প্রসিকিউটর জেনারেল ও ঊর্ধ্বতন বেশ কজন সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দমনে চলমান বলপ্রয়োগ বন্ধে তেহরানের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন।
এ প্রসঙ্গে মন্তব্যের জন্য রয়টার্স অনুরোধ জানালেও নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ইরান মিশন তাৎক্ষণিকভাবে তাতে সাড়া দেয়নি। নিষেধাজ্ঞার ফলে যুক্তরাষ্ট্রে এ কর্মকর্তাদের কোনো সম্পদ থাকলে তা জব্দ হবে, কোনো মার্কিনি তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের লেনদেনও করতে পারবে না। কেবল তা-ই নয়, নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ব্যক্তিদের সঙ্গে লেনদেনকারীরাও পরে ওয়াশিংটনের নিষিদ্ধ তালিকায় ঢুকতে পারে।
মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় তাদের বিবৃতিতে বলেছে, পুলিশি হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর বিক্ষোভ চলাকালে গ্রেফতারকৃতদের কঠোর সাজা দিতে সেপ্টেম্বরে ইরানি আদালতগুলোকে নির্দেশনা দেওয়ায় তারা ইরানের প্রসিকিউটর জেনারেল মোহাম্মদ মোনতাজেরির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে।
ভিড় হটাতে ব্যবহৃত সাঁজোয়া যানসহ ইরানি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার জন্য সরঞ্জাম বানানো কোম্পানি ইমেন সানাত জামান ফারাকেও নিষেধাজ্ঞার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার কথা জানিয়েছে মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়। বুধবার ওয়াশিংটন ইরানের বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর (আইআরজিসি) দুই কর্মকর্তা এবং বিক্ষোভ দমনে মোতায়েন করা আইআরজিসি সংশ্লিষ্ট আধা-সামরিক বাহিনী বাসিজ প্রতিরোধ বাহিনীর দুই কর্মকর্তার ওপরও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
মানবাধিকার চাওয়া নিজ দেশের জনগণের বিরুদ্ধে মারাত্মক সহিংস আচরণ করা ইরানি শাসকদের নিন্দা জানাচ্ছি আমরা বিবৃতিতে বলেছেন মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সন্ত্রাসবাদ ও আর্থিক তথ্যবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ব্রায়ান নেলসন। ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লবের পর এবারের সরকারবিরোধী আন্দোলনকেই দেশটির মোল্লাতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
দেশটির সরকার অস্থিরতা উসকে দেওয়ার পেছনে বিদেশি রাষ্ট্রের হাত দেখছে, আর তাদের নিরাপত্তা বাহিনী ব্যাপক বলপ্রয়োগের মাধ্যমে বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা চালাচ্ছে। অন্য যে কর্মকর্তারা বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় পড়েছেন তাদের মধ্যে আছে, তেহরানের আইআরজিসি কমান্ডার হাসান হাসানজাদে, বাসিজ সাইবারস্পেস সদর দফতরের প্রধান মোসলেম মঈন এবং বাসিজের উপসমন্বয়ক হোসেইন মারুফি।