অর্থ আদালত ডেস্ক : করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে পাচঁমাস যাবৎ বন্ধ থাকার পর পর্যটন নগরী কক্সবাজারের পর্যটন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো আজ ১৭ আগষ্ট, সোমবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেয়া হয়েছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ২৬ মার্চ থেকে দেশের সকল পর্যটন কেন্দ্রের মতো সবচেয়ে বড় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতও বন্ধ ঘোষণা করা হয়। গত ৫ আগস্ট কক্সবাজার জেলা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির জুম কনফারেন্স সভায় শুধুমাত্র কক্সবাজার পৌর এলাকার পর্যটন শিল্প সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানসমুহ খোলার পক্ষে মত দেওয়া হয়। সে অনুযাযী আজ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মানা সাপেক্ষে সীমিত আকারে সৈকতের হোটেল, মোটেল, কটেজ, রেস্ট্যুরেন্টসহ পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো ‘পরীক্ষামূলকভাবে” খুলে দেয়ার অনুমতি দিয়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।
তবে এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতক্রিয়া। পর্যটন শিল্পের সাথে জড়িত কয়েক লক্ষ মানুয়ের জীবন-জীবিকার উপায়টি সচল হওয়াতে স্বাভাবিকভাবেই তারা খুশি।
এদিকে, জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেছেন, জেলার পর্যটন শিল্পের সঙ্গে বিভিন্নভাবে প্রায় কয়েক লাখ মানুষের জীবিকা জড়িত। তাদের কথা চিন্তা করে সীমিত আকারে পর্যটন শিল্প খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পর্যটন শিল্প খুলতে হবে। মেনে চলতে হবে এ বিষয়ে প্রণীত কর্মপন্থার সকল নিয়মাবলী।
জেলা প্রশাসক আরো জানিয়েছেন, পর্যটন শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে এবং আগত পর্যটকদের যেকোনো অবস্থাতে স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করতে হবে। তারপরও কেউ স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এ জন্য কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে সার্বক্ষণিক তদারকি থাকবে বলে উল্লেখ করেন জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন।
দীর্ঘ প্রায় ৫ মাস পর সীমিত আকারে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প খুলে দেয়ার সিদ্ধান্তে সাগরতীরের হোটেল, মোটেল, কটেজ, রেস্ট্যুরেন্ট, ক্ষুদে, ভাসমান ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের মাঝে ফিরে এসেছে কর্মচাঞ্চল্য। স্বাস্থ্যবিধির আলোকে নেয়া হচ্ছে বিভিন্ন ব্যবস্থা। ফিরে আসছে, কক্সবাজারের কোলাহলময় পর্যটন শিল্পের আসল রূপ।
জেলা টুরিস্ট পুলিশও ইতোমধ্যে পর্যটক এবং পর্যটন শিল্পের সার্বিক নিরাপত্তায় তাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশের এসপি জিল্লুর রহমান।
ওদিকে, পার্শবর্তী পার্বত্য জেলা বান্দরবানের পর্যটনকেন্দ্র এবং আবাসিক হোটেল-মোটেলগুলো এখনই খুলে দেওয়া হচ্ছে না। ঈদুল আজহার পরও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ না কমায় এগুলো খোলা যাচ্ছে না। জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি সপ্তাহখানেক পরে সভা ডেকে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার পর বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, কোরবানি ঈদে লোকজনের চলাচল বেড়ে গিয়েছিল। এ জন্য করোনা সংক্রমণ উঠা-নামা করছে। এখন প্রতিদিনই করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে পারে।
জেলা প্রশাসক দাউদুল ইসলাম জানালেন,পর্যটনকেন্দ্র এবং হোটেল-মোটেল চালু করার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি। দেখা যাচ্ছে, করোনার সংক্রমণ এখনো রয়ে গেছে। এ জন্য জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়া কেউ এককভাবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সপ্তাহখানেকের মধ্যে করোনা কমিটির সভা ডাকা হবে। সেখানেই সংশ্লিষ্ট সস পক্ষের মতামত নিয়ে পর্যটনকেন্দ্র ও হোটেল-মোটেল খুলে দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।