নিজস্ব প্রতিবেদক :
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১৪ সেপ্টেম্বর ভ্যাট গোয়েন্দার উপপরিচালক নাজমুন্নাহার কায়সার ও ফেরদৌসী মাহবুবের নেতৃত্বে একটি দল নিকুঞ্জ-১ এলাকার এসআর গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যিক হিসাবপত্র জব্দ করে। এসব জব্দকৃত কাগজপত্র যাচাই করে ভ্যাট গোয়েন্দার দল দেখতে পায় উত্তরবঙ্গে এ প্রতিষ্ঠানের দুটো হাইওয়ে রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এই দুই প্রতিষ্ঠান হলো- ফুড ভিলেজ লিমিটেড, ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে বগুড়ার শেরপুর ও অন্যটি ফুড ভিলেজ প্লাস একই মহাসড়কের সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুলে অবস্থিত।
এই প্রতিষ্ঠান দুইটি দীর্ঘদিন ধরে বিক্রয় তথ্য গোপন করে ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে আসছে। দুইটি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২০০ কোটি টাকার বিক্রয় তথ্য গোপন করে প্রায় সাড়ে ২৬ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করেছে মূসক নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।
ভ্যাট গোয়েন্দার মহাপরিচালক ড. মইনুল খান জানান, ফুড ভিলেজ প্লাস প্রতিষ্ঠানটি ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত তিন বছর ৬ মাসে বিক্রয় প্রদর্শন করেছে ২৩ কোটি ১ লাখ টাকা। এর বিপরীতে ভ্যাট পরিশোধ করা হয়েছে দুই কোটি ৫২ লাখ টাকা। কিন্তু জব্দকৃত কাগজে দেখা যায়, প্রকৃত বিক্রয়ের পরিমাণ ১২৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। ফুড ভিলেজ প্লাস একই সময়ে বিক্রয় গোপন করেছে ১০০ কোটি টাকা। এখানে ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে ৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। এই ভ্যাট যথাসময়ে পরিশোধ না করায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক ২% হারে সুদ দাঁড়ায় ৪ কোটি ৭ লাখ টাকা।
একই মালিকানাধীন ফুড ভিলেজ লিমিটেডের ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত তিন বছর ৫ মাসে মাসিক ভ্যাট রিটার্নে বিক্রয় দেখানো হয়েছে ২৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এতে ভ্যাট দেওয়া হয়েছে দুই কোটি ৫১ লাখ টাকা। তবে ভ্যাট গোয়েন্দার অভিযানে এই সময়ে ফুড ভিলেজ লিমিটেডের প্রকৃত বিক্রয় ১২২.২২ কোটি টাকা পাওয়া যায়। এই তথ্য গোপন করায় ফুড ভিলেজ লিমিটেড কর্তৃক ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে ৮.৯৩ কোটি টাকা। এতে সুদ আরোপযোগ্য হয়েছে ৩.৯৯ কোটি টাকা।
দুটো রেস্টুরেন্টে প্রকৃত বিক্রয় গোপন করা হয়েছে মোট ১৯৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। ভ্যাট রিটার্নে এসআর গ্রুপ প্রায় ৭২% তথ্য গোপন করে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। এই অসৎ উপায়ে তথ্য গোপন করায় সরকার এই দুই রেস্টুরেন্ট থেকে ২৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকার ভ্যাট থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
এসব তথ্য সংশ্লিষ্ট ভ্যাট রিটার্নের সঙ্গে যাচাই করে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে দুইটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।