ওমিক্রন নিয়ে শঙ্কা পোশাক মালিকদের

ওমিক্রন নিয়ে শঙ্কা পোশাক মালিকদের

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

পোশাক রপ্তানির উচ্চ প্রবৃদ্ধির ওপর ভর করে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) রপ্তানি আয় বেড়েছে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৪.২৯ শতাংশ। এ সময় রপ্তানি আয় হয়েছে এক হাজার ৯৭৯ কোটি ইউএস ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৩.২৭ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে একক মাস হিসেবে সর্বশেষ নভেম্বর মাসে রপ্তানি আয় আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ৩১.২৫ শতাংশ বেড়েছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্যে জানা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক হাজার ৭৪৭ কোটি ২০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে এক হাজার ৯৭৯ কোটি ডলার। আর গত অর্থবছরের একই সময়ে আয় ছিল এক হাজার ৫৯২ কোটি ৩৫ লাখ ডলার।

অন্যদিকে নভেম্বর মাসে ৩৫৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪০৪ কোটি ১৩ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় গত মাসে রপ্তানি আয় ১৩.০৪ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের নভেম্বরে রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল ৩০৭ কোটি ৮৯ লাখ ডলার।

প্রধান রপ্তানি পণ্য পোশাক খাতের রপ্তানি আয় ভালো হওয়ায় রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। রপ্তানিমুখী শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিগত কয়েক মাসে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হলেও আমাদের কারখানাগুলো অতিমারির ক্ষয়ক্ষতি এখনো পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেনি। ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের আগমনে বৈশ্বিক অর্থনীতি এরই মধ্যে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। গত বছরের মতো এই বছরেও বড়দিনের বিক্রি ক্ষতিগ্রস্ত হলে কারখানাগুলো তাদের উৎপাদন চালিয়ে নিতে হুমকির মধ্যে পড়বে।’

ইপিবির হালনাগাদ তথ্যানুযায়ী, তৈরি পোশাকের রপ্তানি আয় ও প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় দুই-ই বেড়েছে। এক হাজার ৪১১ কোটি ৫৭ লাখ ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫৮৫ কোটি ৬২ ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২২.৯৭ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ে এই খাতে রপ্তানি ছিল এক হাজার ২৮৯ কোটি ৪৬ লাখ ডলার।

জুলাই-নভেম্বর সময়ে নিট পণ্যের (সোয়েটার, টি-শার্ট জাতীয় পোশাক) রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৮৩ কোটি ৮৩ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ৮৯৮ কোটি ৫৫ লাখ ডলার। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ২৫.৯১ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৭১৩ কোটি ৬৩ লাখ ডলার।

আলোচ্য সময়ে ওভেন পণ্যের (শার্ট, প্যান্ট জাতীয় পোশাক) রপ্তানি আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৯.৩২ শতাংশ। ৬২৭ কোটি ৭৪ লাখ ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ওভেন পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৬৮৭ কোটি ডলারের। গত বছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৫৭৫ কোটি ৮৩ লাখ ডলার।

জুলাই-নভেম্বর এই পাঁচ মাসে অন্যান্য পণ্যের মধ্যে প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানি আয় বেড়েছে। এই খাতে রপ্তানি আয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে পাঁচ কোটি ৭০ লাখ ডলার, যার প্রবৃদ্ধি ২৯.৮ শতাংশ। কৃষিজাত পণ্য রপ্তানির আয় বেড়েছে উল্লেখ করার মতো। এ সময় কৃষিজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৫৫ কোটি ৬৪ লাখ ডলারের, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৪.৩৭ শতাংশ বেশি।

আলোচ্য সময়ে ৪৫ কোটি ৬৮ লাখ ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৭.৪১ শতাংশ। এ ছাড়া টেরিটাওয়েল, হোম টেক্সটাইল ও হস্তশিল্প পণ্যের রপ্তানি আয়ও বেড়েছে।

Loading

পোষ্টটি প্রয়োজনীয় মনে হলে শেয়ার করতে পারেন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!