নিউজ ডেস্কঃ
গ্রিসে যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ জনে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৮৫ জন। তবে কয়েক দশকের মধ্যে দেশটিতে ঘটে যাওয়া এমন মারাত্মক প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার কারণ এখনও জানা যায়নি।
দুর্ঘটনার বিষয়ে থেসালি অঞ্চলের গভর্নর কনস্টান্টিনোস অ্যাগোরাস্টোস জানিয়েছেন, মধ্য গ্রিসের লারিসা শহরে এথেন্স থেকে উত্তরাঞ্চলীয় শহর থেসালোনিকি যাওয়া একটি আন্তঃনগর যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে বাইরে থেকে আসা একটি পণ্যবাহী ট্রেনের সংঘর্ষে এ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
এসকেএআই টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গভর্নর আরও বলেন, সংঘর্ষটি খুব মর্মান্তিক ছিল। যাত্রীবাহী ট্রেনের প্রথম চারটি বগিও লাইনচ্যুত হয়েছে। সংঘর্ষের পরপরই আগুন ধরে যায় প্রথম দুটি বগিতে। যা প্রায় পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়।
দুর্ঘটনার পর প্রায় আড়াইশ যাত্রীকে বাসে করে থেসালোনিকিতে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়।
দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া এক ব্যক্তি স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইআরটিকে জানান, তিনি তার সুটকেস দিয়ে ট্রেনের জানালা ভেঙে বেরিয়ে আসেন।
ট্রেন থেকে উদ্ধার করে সেতুর কাছে সরিয়ে নেওয়া আরেক যুবক জানান, বগির ভেতরে থাকা সবাই বেশ আতংকিত হয়ে পড়েছিলেন এবং চিৎকার করতে শুরু করেছিলেন।
ট্রেনের যাত্রী অ্যাঞ্জেলোস সিমাউরাস বলেন, এটি ছিলো একটা ভূমিকম্পের মতো।
সংবাদমাধ্যম ইআরটি প্রকাশিত দুর্ঘটনাস্থলের ফুটেজে লাইনচ্যুত বগি, দুমড়েমুচড়ে যাওয়া ট্রেন, ব্যাপক ধোঁয়াসহ রাস্তার পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়া ধ্বংসাবশেষের চিত্র দেখা যায়। উদ্ধারকর্মীদের বগিগুলোতে টর্চ নিয়ে আটকে পড়া যাত্রীদের খোঁজ করতে দেখা গেছে।
দমকল বাহিনীর মুখপাত্র ভ্যাসিলিস ভার্থকোগিয়ানিস এক টেলিভিশন ভাষণে জানিয়েছেন, দুটি ট্রেনের সংঘর্ষের তীব্রতার কারণে অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতিতে যাত্রীদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে।
বুধবার ভোরবেলা রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম ইআরটির ফুটেজে দেখা গেছে উদ্ধারকর্মীরা হেডলাইট জ্বালিয়ে ধ্বংসাবশেষ ও আশেপাশের মাঠগুলোতে জীবিতদের খোঁজ উদ্ধারে কাজ করছেন।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, যাত্রীবাহী ট্রেনটিতে প্রায় সাড়ে ৩০০ যাত্রী ছিলেন। যা স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এথেন্স থেকে যাত্রা শুরু করে থেসালোনিকির উদ্দেশ্যে। অন্যদিকে পণ্যবাহী ট্রেনটি থেসালোনিকি থেকে ছেড়ে লারিসার দিকে যাত্রা করে। লারিনা শহরের কাছে ট্রেন দুটির মধ্যে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
গভর্নর কনস্টান্টিনোস অ্যাগোরাস্টোস বলেন, দুটি ট্রেনই ব্যাপক গতিতে যাত্রা করছিল এবং কোনো ট্রেনের চালকই অন্য ট্রেনের আসার বিষয়টি জানত না।
এর আগে গ্রিসে ১৯৭২ সালে এমন ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। সে সময় লরিসার বাইরে দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৯ জন নিহত হন।