চাকরি জাতীয়করণে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইলেন শিক্ষকরা

চাকরি জাতীয়করণে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইলেন শিক্ষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

মাধ্যমিকের শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি। একই সঙ্গে দাবি আদায়ে আগামী ২০ মার্চ প্রতিটি জেলায় মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করার কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি৷

গতকাল (১৫ মার্চ) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের মহাসচিব মো. আবদুর রহমান।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দেশে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পাস করা একজন শিক্ষকের বেতন মাত্র ১২ হাজার ৫০০ টাকা। ১০ বছর চাকরি করার পর একটি উচ্চতর স্কেল এবং ১৬ বছর পর আরও একটি উচ্চতর স্কেল প্রদান করেও সর্বসাকুল্যে একজন শিক্ষকের বেতন দাঁড়ায় ২২ থেকে ২৩ হাজার টাকা মাত্র। ২০১৫ সালে জাতীয় বেতন স্কেল প্রদান করা হলেও প্রায় ৮ বছর পেরিয়ে গেছে, এখনও নতুন কোনো পে-স্কেল ঘোষণা করা হয়নি।

আবদুর রহমান বলেন, দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতিতে সামান্য বেতনে শিক্ষক-কর্মচারীদের সংসার চালানো এবং সন্তানদের পড়ালেখার খরচ চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। শিক্ষকসমাজ আজ ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। ২০০৪ সালে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা প্রদান করা হলেও প্রায় ১৮ বছরে তা আর বাড়েনি। বাড়ি ভাড়া বাবদ দেওয়া হয় ১ হাজার টাকা। চিকিৎসা ভাতা বাবদ দেওয়া হয় মাত্র ৫০০ টাকা।

তিনি বলেন, ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট প্রদান করা হলেও অবসর ও কল্যাণ ভাতার জন্য অতিরিক্ত ৪ শতাংশসহ মোট ১০ শতাংশ টাকা কেটে নেওয়া হয়। আমাদের সন্তানদের কোনো শিক্ষাভাতা প্রদান করা হয় না। অবসর ও কল্যাণ ভাতার টাকা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে তিন থেকে চার বছর অপেক্ষা করতে হয়। নাই কোনো অবসর পদ্ধতিমূলক পিআরএল ব্যবস্থা।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, এ সমস্যা নিরসনের একমাত্র পথ হলো বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণ। বেসরকারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের বেতনসহ সব আয় সরকারের কোষাগারে জমা নিয়ে সেই টাকা দিয়েই শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণ করে বেতন-ভাতা দেওয়া সম্ভব বলে আমরা মনে করি। প্রায় ১৫ বছর যাবৎ মুক্তিযুদ্ধের ধারক-বাহক মেহনতি মানুষের কল্যাণে সরকার দৃশ্যমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছে।

‘আমরা আশা করেছিলাম জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকীকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের চাকরি জাতীয়করণের ঘোষণা দেবেন। কিন্তু আমরা আশাহত হয়েছি। তাই প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমাদের অনুরোধ, আগামী ২০২৩-২৪ জাতীয় বাজেটেই বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণের জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ প্রদানে অর্থমন্ত্রীকে নির্দেশনা প্রদান করবেন এবং সেই লক্ষ্যে আগামী ঈদুল ফিতরের আগেই পূর্ণাঙ্গ ঈদ বোনাস প্রদানের যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’ যোগ করেন তিনি।

Loading

পোষ্টটি প্রয়োজনীয় মনে হলে শেয়ার করতে পারেন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!