ডিএনএ পরীক্ষায় মিললো ধর্ষণের সত্যতা

ডিএনএ পরীক্ষায় মিললো ধর্ষণের সত্যতা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

বিয়ের প্রলোভনে সহকর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগের মামলায় আরেক শিক্ষানবিশ আইনজীবী পল্টন দাশকে কারাগারে পাঠিয়েছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত। পাশাপাশি মামলাটি বিচারের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ স্থানান্তরের আদেশ দেন বিচারক।

চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের চতুর্থ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরিফুল ইসলাম রোববার (৫ মার্চ) এই আদেশ দেন।

পল্টন দাশ চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানার পশ্চিম সরফভাটা গ্রামের অ্যাডভোকেট বঙ্গিম চন্দ্র দাশের ছেলে। বঙ্গিম চন্দ্র দাশ চট্টগ্রাম আদালতের একজন আইনজীবী।

বাদীপক্ষের আইনজীবী শাহিন সুলতানা হীরা বলেন, বিয়ের প্রলোভনে শিক্ষানবিশ নারী আইনজীবীকে ধর্ষণের ঘটনায় ২০২১ সালের ৬ জুন কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়েছিল। মামলার সময় ভিকটিম (শিক্ষানবিশ আইনজীবী) ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।

পরবর্তী সময়ে মামলার তদন্ত চলাকালে ভিকটিম পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। এরপর আদালতের নির্দেশে পুলিশ ভিকটিমের জন্ম দেওয়া শিশুর ডিএনএ পরীক্ষা করে আসামি পল্টন দাশকে জৈবিক পিতা হিসেবে শনাক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।

‘রোববার আদালতে অভিযোগপত্রের বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য ছিল। আদালত আসামির জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে মামলাটি বিচারিক আদালত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ স্থানান্তরের আদেশ দেন।’

এদিন আদালতে আসামির পক্ষে জামিনের আবেদন করেন বিজয় কৃষ্ণ ঘোষ। এ সময় ডিএনএ প্রতিবেদনসহ সব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়।

এর আগে মামলার তদন্ত শেষে গত ২০ ফেব্রুয়ারি কোতোয়ালি থানার এসআই মেহেদী হাসান আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় চার্জশিট প্রদান করেন। এতে পল্টন দাশকে অভিযুক্ত করে সাতজনকে সাক্ষী করা হয়। রোববার চার্জশিট গ্রহণ বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য ছিল। রোববার আইনজীবীর পোশাক পরেই পল্টন দাশ আদালতে হাজির হন। এরপর শুনানি শেষে আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ২০১৭ সালে চট্টগ্রাম আইন কলেজে প্রথমবর্ষে অধ্যয়নরত অবস্থায় অভিযুক্ত পল্টন দাশের সঙ্গে ওই নারীর পরিচয় হয়। পারিবারিক জমি-জমা সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ নিতে ওই নারী পল্টনের কাছে যেতেন। এর সুবাদে তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে তা প্রেমে গড়ায়। পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ভিকটিমের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন পল্টন দাশ।

২০২০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত চট্টগ্রাম আদালতের দোয়েল ভবনের সপ্তম তলার ৭১৮ নম্বর কক্ষসহ নগরীর বিভিন্ন হোটেলে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয় বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়। এর ফলে ভিকটিম অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন।

বিষয়টি পল্টনকে জানালে তিনি গর্ভপাত করতে বলেন। এমনকি বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ওই নারীকে টাকা দেওয়ার প্রস্তাবও করা হয়। এরপর ভিকটিমের মা বাদী হয়ে ২০২১ সালের ৬ জুন নগরীর কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন।

ওই মামলায় ২০২১ সালের ১০ জুন পল্টন দাশকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ১১ জুন পল্টনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। এরমধ্যে ডিএনএ টেস্ট করে রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত পল্টনকে জামিন দেন আদালত। গ্রেপ্তারের ১৩ দিন পর ২৩ জুন পল্টন জামিনে মুক্তি পান।

Loading

পোষ্টটি প্রয়োজনীয় মনে হলে শেয়ার করতে পারেন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!