স্টাডি রুম ডেস্ক :
শাব্দিক অর্থে কপিরাইটের অর্থ কপি বা পুনরুৎপাদন করার অধিকার। কপিরাইট বলতে কতিপয় কর্মের উপর কতিপয় স্বার্থরক্ষার জন্য একচ্ছত্র আইনগত অধিকার বোঝায়। ২০০০ সালে প্রণীত এই আইনে সাহিত্য, নাট্য, সংগীত ও শিল্পকর্ম, চলচ্চিত্র ,ছবি, শব্দ রেকর্ডিং জাতীয় বুদ্ধিবৃত্তিক শিল্পকর্মের মৌলিক স্বত্ত্বকে আইনগতভাবে সংরক্ষন করার কথা বলা হয়েছে। কোন কর্মের প্রণেতা কপিরাইট এর প্রথম স্বত্বাধিকারী,তবে কপিরাইট আইনের কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে। অত্র আইনে কপিরাইটস্বত্ব নিয়োগ মালিকানা হস্তান্তর করা যায়। তবে সেটা অবশ্যই এগ্রিমেন্ট বা সম্মতির ভিত্তিতে হতে হবে। বিভিন্ন প্রকার কর্মের উপর পুনরুৎপাদন করার অধিকার বিভিন্ন মেয়াদে দেওয়া হয়েছে। একজন লেখক বা তার উদ্ভাবক উদ্ভাবিত বিষয়টি যাতে প্রকৃত মালিকের হতে পারে এবং সঠিক মূল্যায়নের মাধ্যমে অধিকার স্থাপন করতে পারেন সেই প্রেক্ষিতে কপিরাইট আইন ২০০০ প্রণয়ন করা হয়।
কপিরাইট আইনের ঐতিহাসিক পটভূমি : ১৯৬৭সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি হতে তৎকালীন কপিরাইট অধ্যাদেশ কার্যকর করা হয়। তার পূর্বে ১৯১৪ সালে কপিরাইট আইন বলবৎ ছিল বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পরেও পাকিস্তানের ১৯৬২ সালের কপিরাইট অধ্যাদেশ কে চালু রাখা হয় যার ১৯৭৪ সালের সংশোধনী করে রদবদল করা হয়। সময়ের প্রয়োজনে যুগোপযোগী আইন পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে, কপিরাইট আইন ২০০০নামে একটি নতুন আইন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে পাশ হবার পর, মহামান্য রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভ করে। তবে আইনটি কত তারিখে কার্যকর হবে তা সুস্পষ্টভাবে লিখিত না থাকলেও সরকারি গেজেটে প্রকাশের তারিখ হতে অর্থাৎ ১৮ জুলাই ২০০০ হতে অত্র আইনটি বলবৎ হবে। কপিরাইট আইন ২০০০ এর প্রস্তাবনায় অত্র আইন এর পরিসীমা ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে মূলত ব্রিটিশ কপিরাইট আইন ১৯১১ এর হাত ধরে আজকের কপিরাইট আইন 2000 এর উৎপত্তি।
কপিরাইট এর অর্থ: অত্র আইনের ১৪ নং ধারায় এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে এই আইনের বিধান সাপেক্ষে সাহিত্য, নাটক, সঙ্গীত, শিল্পকর্ম, চলচ্চিত্র, শব্দ রেকর্ডিং প্রভৃত্তি মেধাভিত্তিক কর্মের সংরক্ষণ করা সহ বস্তুগত আঙ্গিকে কর্মের পুনরুৎপাদন করা অনুবাদ বা অভিযোজন করা অথবা অনুলিপি বিক্রয় বা ভাড়া প্রদান করা অথবা তার প্রস্তাব করা এবং জনগণের মধ্যে প্রচার বা প্রদর্শন করা কে বোঝাবে তবে এক্ষেত্রে প্রণেতার বিশেষ স্বত্ব অত্র আইনের ২৩ ধারা ও ৭৮ ধারা অনুযায়ী স্বত্ব সংরক্ষিত হবে।
কপিরাইট আইনের মূল বিষয়বস্তু : কপিরাইট আইন ২০০০, ১৭ টি অধ্যায় নিয়ে আইন প্রণয়ন করা হলেও পরবর্তীতে অত্র আইনের সংশোধন কল্পে ২০০৫ সালের ১৪ নং আইন দ্বারা ২০০০ সালের কপিরাইট আইন (২৮নং আইন)দ্বারা সংশোধন করা হয়। কপিরাইট আইন ২০০০ এর ২নং ধারায় বিভিন্ন শাব্দিক অর্থে কপিরাইট আইনে কোন অর্থে অভিহিত হবে সেটা বোঝানো হয়েছে। বৈ্দেশিক সাহিত্যকর্মের ক্ষেত্রে আর্ন্তজাতিক কপিরাইট অধ্যাদেশ ২০০৫এর ৬৯ ধারা অনুযায়ী নির্ধারিত হবে।
২য় পর্বের লিঙ্কঃ প্রসঙ্গ কপিরাইট আইন ২০০০ (২ম পর্ব)
লেখকঃ আরফান সুলতানা প্রিয়াশ্রী, আইনজীবী।
( চলবে …..)