নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাইড শেয়ারিং পাঠাও কোম্পানির সহ প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহ’র খুনি কে গ্রেপ্তার করেছে নিইয়র্ক পুলিশ। এসম্পর্কে ফেসবুকে বিস্তারিত লিখেছেন নিহত ফাহিমের এক আত্মীয়। তা হুবহু তুলে ধরা হলো।
ফাহিম সালেহর হত্যাকারী ধরা পড়েছে। ধন্যবাদ NYPD কে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে খুনীকে গ্রেফতারের জন্য। খুব ঘনিষ্ঠ মানুষদেরই নাকি কারো ক্ষতি করার সবচেয়ে ভাল সুযোগ থাকে। ফাহিম হয়ত ভাবেইনি সবচেয়ে বিশ্বাস করা, একসাথে দিনরাত কাজ করা আর উঠবস করা ছেলেটাই তাকে খুন করে খন্ড বিখন্ড করবে।
খুনী ফাহিমের শেষ ৪ বছরের ব্যক্তিগত সহকারী, ২১ বছরের তরুণ Tyrese Devon Haspil। ১৭ বছর বয়স হতেই একসাথে কাজ করা ডেভন, কিছুদিন ধরেই ফাহিমের হাজার হাজার ডলার চুরি করছিল। ধরা পড়ার পর ফাহিম পুলিশে রিপোর্ট না করে ডেভনকে ইন্সটলমেন্টে পুরো টাকা পরিশোধের সুযোগ করে দিয়েছিল। এইখানে ফাহিম মানুষ চিনতে বড় ভুল করেছে। পুলিশে রিপোর্ট করা থাকলে ডেভন ওর ক্ষতি করার সাহস করত না। মেরে দেয়া টাকা পরিশোধ না করার জন্য ডেভন ফাহিমকে খুনের পরিকল্পনা করে।
সোমবার দুপুরেই ফাহিমের এপার্টমেন্টে ওকে খুন করা হয়। লিফট হতে বের হবার পর এপার্টমেন্টে প্রবেশের আগে দুজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়৷ ডেভন একটা টিজার গান ব্যবহার করে ফাহিমকে অজ্ঞান করে এবং পরে এপার্টমেন্টের ভিতরে নিয়ে গলা আর ঘাড়ে কয়েকবার ছুরি মেরে হত্যা করে। সেদিন ডেভন চলে গিয়ে পরদিন লাশ গুম করে দেয়ার জন্য মঙ্গলবার দুপুরে আবার ফিরে আসে। ইলেক্ট্রিক করাত দিয়ে কেটে ব্যাগে ভরার সময় ওর বোন এসে বেল দিলে ডেভন ওভাবেই সব ফেলে পিছনের সিঁড়ি দিয়ে পালিয়ে যায়।
ডেভনই যে খুনী তার আরেকটা প্রমাণ হিসেবে ওর কাছ থেকে ফাহিমের ক্রেডিট কার্ডও উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই কার্ড ব্যবহার করে ডেভন ইতিমধ্যে প্রচুর কেনাকাটাও করেছে।
যে মানুষটা ওকে চুরির দায়ে জেলে না দিয়ে আরেকটা সুযোগ দিয়েছিল, তাকেই হত্যা করল ডেভন। এজন্যই বলা হয়, মানুষের চাইতে নিষ্ঠুর আর অকৃতজ্ঞ প্রাণী আর হয় না।
ডেভন শুধু একটা নিরীহ প্রাণই হত্যা করেনি, হত্যা করেছে কোন বাবা-মায়ের একমাত্র পুত্র সন্তানকে। হত্যা করেছে একটা অমিত সম্ভাবনাময় বাঙালি যুবককে যার মাধ্যমে লাল-সবুজের সুনাম বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ত। হত্যা করেছে লাখ লাখ মানুষের জীবন আর জীবিকা গড়ে উঠার সম্ভাবনাকে।
AtiqueUaKhan এর ফেসবুক টাইমলাইন থেকে নেওয়া।