নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও বিশ্ব বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ভাষা, কারিগরি শিক্ষা ও নেতৃত্বের দক্ষতা অর্জন করা খুবই জরুরি। বিশ্বায়নের চাহিদার আলোকে নিজেদেরকে আরও দক্ষ করতে হবে।
বুধবার (১ মার্চ) আয়াত এডুকেশন ও কানাডার সেনেকা কলেজের যৌথ উদ্যোগে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁ হোটেলে ‘বিশ্ববাজারে একবিংশ শতাব্দীর দক্ষতা’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে আয়াত এডুকেশন ও সেনেকা কলেজের মধ্যে কানাডাতে পেশাগত দক্ষতামূলক প্রশিক্ষণ ও উচ্চ শিক্ষা প্রদানে এক সমঝোতা চুক্তি সই হয়।
এ সময় আয়াত এডুকেশনের পক্ষে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নুসরাত আমান ও সেনেকার পক্ষে কলেজটির প্রেসিডেন্ট ডেভিড এঞ্জিউ। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অতিথিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত কানাডিয়ান হাইকমিশনের কাউন্সিলর ও সিনিয়র ট্রেড কমিশনার এঞ্জেলা ডার্ক, আয়াত এডুকেশনের চেয়ারম্যান তাহসিন আমান, সিওও ইমরান চৌধুরী, আয়াত কলেজ অব নার্সিং অ্যান্ড হেল্থ সায়েন্সেস এর অধ্যক্ষ হালিমা আক্তার উপস্থিত ছিলেন।
উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, বিশ্বজুড়ে অটোমেশনের মতো কারিগরিভিত্তিক জ্ঞান ও দক্ষতার চাহিদা বাড়ছে। দক্ষ মানবসম্পদের প্রয়োজনীয়তা ও সরবরাহের মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে যা পূরণ করা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে খুবই জরুরি।
ঢাকায় নিযুক্ত কানাডিয়ান হাইকমিশনের কাউন্সিলর এঞ্জেলা ডার্ক বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষকদের মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের জন্য আরও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা দরকার যেটা আয়াত এডুকেশনের সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে আমরা করতে যাচ্ছি। এজন্য আমরা একটা কারিকুলাম প্রতিষ্ঠা করতে চাই যেটা কোর্স প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা হবে। বাংলাদেশের শিক্ষায় কারিকুলামগত গ্যাপ রয়েছে।
সেনেকা কলেজের প্রেসিডেন্ট ডেভিড এঞ্জিউ বলেন, বাংলাদেশের সব সেক্টরের মানুষদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রদানে আমাদের আকাঙ্ক্ষা আছে এবং এই সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে আমরা সেই কাঙ্ক্ষিত মানুষদের কাছে পৌঁছাতে পারব।
শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, এসব কাজের জন্য আমাদের একটি পরামর্শক টিম ও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ডাটা কালেকশনের মাধ্যমে আমরা আমাদের কোর্সসমূহ উন্নয়ন করি। যার মাধ্যমে আমরা কৃষি, নার্সিং, প্রশাসন ও নির্মাণ শিল্পসহ সব চাহিদাসম্পন্ন খাতগুলোর জন্য মানসম্মত শিক্ষা ও ভোকেশনাল প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করব।
আয়াত এডুকেশনের চেয়ারম্যান তাহসিন আমান বলেন, নার্সিং পেশার অনেক নেতিবাচক কথা আছে যার ওপর আমরা যৌথভাবে কাজ করছি। আমরা শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রদানে বাইরে পাঠানোর কাজ করছি যা নার্সিং পেশার মানোন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।
আয়াত এডুকেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত আমান শিক্ষার্থীদের জীবনমান উন্নয়নে বেসিক ডিগ্রির পাশাপাশি বাইরের দক্ষতা, জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ অর্জনের গুরুত্বের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, ভোকেশনাল প্রশিক্ষণের প্রতি শিক্ষার্থীদের মনোযোগ আরও বাড়ানো দরকার। আয়াত এডুকেশন সে লক্ষ্য কাজ করছে। এমনকি প্রান্তিক এলাকাতেও এটা নিয়ে কাজ করতে চাই আমরা।
আয়াত এডুকেশন মূলত একটি সামাজিক সংস্থা যার প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে, দেশের যুব ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন ও আর্থ-সামাজিক অবস্থাকে আরও সমৃদ্ধ করা। স্বাস্থ্যশিক্ষা প্রদান, দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ, জব প্লেসমেন্ট সার্ভিস ও পলিসি এডভোকেসি ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে আয়াত এডুকেশন তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
এ কার্যক্রমে এখন পর্যন্ত ৩৬০০ এরও বেশি শিক্ষার্থীকে নার্সিং ও ভোকেশনাল ট্রেনিং প্রদানের পর তাদের মধ্য থেকে ২২০০ জনেরও বেশি যুবককে দেশের বিভিন্ন লিডিং প্রতিষ্ঠানে চাকরির ব্যবস্থা করা হয়েছে।