মুক্তিপণের দাবিতে গরম পানি ঢেলে নির্যাতন

মুক্তিপণের দাবিতে গরম পানি ঢেলে নির্যাতন

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানার চান্দুরা এলাকার বাসিন্দা মো. আলমগীর (৪২) ওষুধের ব্যবসা করেন। শনিবার বিকেলে জমি কেনার জন্য চান্দুরা চৌরাস্তার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন। এর পর অপহরণ চক্র তাঁকে অপহরণ করে। ঢাকার যাত্রাবাড়ী এনে আটকে রেখে তাঁর পরিবারের কাছে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করা হয়।

গতকাল সোমবার র‍্যাব-১০ যাত্রাবাড়ীর বউবাজার ছনটেক এলাকা থেকে আহত অবস্থায় অপহৃত ব্যক্তিকে উদ্ধার ও অপহরণ চক্রের ৮ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। গরম পানি ঢেলে ও কোমরের পেছনের অংশে গরম আয়রনের ছ্যাঁকা দিয়ে নির্যাতন করা হয় আলমগীরকে।

আজ মঙ্গলবার কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলো সিয়াম আল জেরিন তালুকদার (৩৩), রাসেল শেখ  ওরফে মিঠু (৩৩), শহিদুল ইসলাম (৩৭), প্রণব নারায়ণ ভৌমিক (৫০), মো. আলমগীর (৪২), আ. রব খান (৭৮), সৈয়দা জান্নাত আরা ঊর্মি (২৭) ও ইসরাত জাহান সায়লা (২৯)। তাদের কাছ থেকে একটি খেলনা পিস্তল, তিনটি চাকু, একটি হাতুড়ি ও একটি আয়রন মেশিন জব্দ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-১০-এর অধিনায়ক মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা কালিয়াকৈর, চান্দুরাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় জমি বেচাকেনার কথা বলে ক্রেতা-বিক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করে। এরপর জমির বায়নানামার কথা বলে ডেকে নিয়ে অপহরণ করে। যাত্রাবাড়ীর ছনটেকসহ বিভিন্ন জায়গায় তাদের আস্তানা রয়েছে। এসব আস্তানায় অপহৃত ব্যক্তিকে আটকে রেখে মুক্তিপণের জন্য নির্যাতন করা হয়। টাকা আদায় করতে নির্যাতনের ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারণ করে ভুক্তভোগীর পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেয়।

র‍্যাব বলছে, চান্দুরায় আলমগীরের ওষুধের দোকান রয়েছে। অপহরণ চক্রের সদস্যরা জমি বিক্রির কথা বলে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে। গত শনিবার জমি বায়নানামার কথা বলে আলমগীরকে চান্দুরা চৌরাস্তায় ডেকে অপহরণ করে চক্রটি। তিনি বাড়িতে না ফেরায় রাত ১১টার দিকে পরিবারের লোকজন ফোন করে সেটি বন্ধ পান। পরে কালিয়াকৈর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তাঁরা।

এদিকে, যাত্রাবাড়ীর ছনটেকের আস্তানায় তাঁকে আটকে রেখে নির্যাতন করে চক্রটি। পরদিন সকালে আলমগীরের স্ত্রীর মোবাইল ফোনে চক্রের এক সদস্য কল করে অপহরণের বিষয়টি জানিয়ে মুক্তিপণ হিসেবে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। ফোনে আলমগীরের নির্যাতনের চিৎকার শোনায় তারা। টাকা না পাওয়ায় নির্যাতন বাড়তে থাকে। তাঁর শরীরের পেছনের অংশে গরম তেল ঢেলে  দেওয়া হয়। পরে গরম আয়রন মেশিন দিয়ে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়। এতে শরীরের চামড়া উঠে গেছে। মুক্তিপণ আদায়ের জন্য এ ধরনের নির্যাতন করা হয় তার ওপর।

Loading

পোষ্টটি প্রয়োজনীয় মনে হলে শেয়ার করতে পারেন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!