যাবজ্জীবন যুদ্ধাপরাধী ফখরুজ্জামান গ্রেপ্তার

যাবজ্জীবন যুদ্ধাপরাধী ফখরুজ্জামান গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

মানবতাবিরোধী অপরাধে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মো. ফখরুজ্জামানকে (৬৬) গ্রেপ্তার করেছে এন্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ)। এন্টি টেরোরিজম ইউনিটের পুলিশ সুপার (মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস উইং) মোহাম্মদ আসলাম খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান এন্টি টেরোরিজম ইউনিটের (এটিইউ) একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে খিলগাঁও থানার দক্ষিণ গোড়ান এলাকা থেকে মো. ফখরুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মোহাম্মদ আসলাম খান আরও জানান, ২০১৫ সালের ১৯ মে ত্রিশালের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রহমানের স্ত্রী রহিমা খাতুন ময়মনসিংহের ১ নম্বর আমলি আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১৯৭১ সালের ২১ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তৎকালীন শান্তি কমিটির ময়মনসিংহ শহর শাখার আহ্বায়ক এম এ হান্নানের নির্দেশে পাক হানাদার বাহিনী এবং তাদের দোসররা ত্রিশালের কালির বাজার ও কানিহারী এলাকায় শতাধিক গণহত্যা, কয়েক কোটি টাকার সম্পদ লুণ্ঠন, ধর্ষণ, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ আনা হয়েছে। জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য এম এ হান্নান, তার ছেলে ও মো. ফখরুজ্জামানের বিরুদ্ধে তিনি মামলাটি করেন।

বিচারক মামলার এজাহারটি গ্রহণ করে সেটি ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আদেশ দেন। ২০১৫ সালের ১০ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন ১৯৭৩ মূলে পরোয়ানা জারি করলে হান্নানকে গুলশানের বাড়ি এবং ছেলে রফিক সাজ্জাদকে গুলশান এলাকায় তার অফিস থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ মামলায় অপর আসামি মো. ফখরুজ্জামান ও ছাব্বির পলাতক ছিল। ২০১৬ সালের ১১ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা আসামিদের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন শাখায় দাখিল করেন।

২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর মো. হরমুজ আলী, মো. আব্দুস সাত্তার, খন্দকার গোলাম রাব্বানী, খন্দকার গোলাম সাব্বির আহমেদ ও মো. ফখরুজ্জামানসহ আটজনের বিরুদ্ধে ট্রাইবুনাল অভিযোগ গঠন করেন। তন্মধ্যে আসামি জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য এম এ হান্নান, তার ছেলে রফিক সাজ্জাত ও মিজানুর রহমান মিন্টু মৃত্যুবরণ করেছেন।

এটিইউ জানায়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম সমন্বয়ে তিন সদস্যের বেঞ্চ ২০ ফেব্রুয়ারি সোমবার ময়মনসিংহের গোলকিবাড়ি বাইলেনের প্রখ্যাত ভাস্কর আব্দুর রশিদকে অপহরণের পর জিপ গাড়ির পেছনে রশি দিয়ে বেঁধে টেনেহিঁছড়ে নির্মমভাবে হত্যা ও মরদেহ গুমের অপরাধে মো. ফখরুজ্জমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ভিন্ন ভিন্ন অপরাধে অন্যান্য আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড সাজা প্রদান করেন।

গ্রেপ্তারকৃত যুদ্ধাপরাধী মো. ফখরুজ্জামানকে ময়মনসিংহের কোতয়ালি মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে এন্টি টেরোরিজম ইউনিট।

Loading

পোষ্টটি প্রয়োজনীয় মনে হলে শেয়ার করতে পারেন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!