নিজস্ব প্রতিবেদক: ১৯৫৩ সালে মাত্র ১৬১ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল বিশ্ববিদ্যালয়টি। শহীদ ড. শামসুজ্জোহার স্মৃতি বিজড়িত এ বিদ্যাপীঠের রয়েছে গৌরব-ঐতিহ্যের সুদীর্ঘ ইতিহাস।
১৯৫০ সালের ১৫ নভেম্বর রাজশাহীর বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে গঠন করা হয় ৬৪ সদস্যের একটি কমিটি। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানাতে গিয়ে কারারুদ্ধ হন ১৫ ছাত্রনেতা। পরে ছাত্রজনতার পক্ষ থেকে ঢাকায় একটি ডেলিগেশন পাঠানো হয়৷ এভাবে একের পর এক আন্দালনের চাপে স্থানীয় আইন পরিষদ রাজশাহীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে গুরুত্ব দেয়৷ এ আন্দোলনে একাত্ম হন পূর্ববঙ্গীয় আইনসভার সদস্য প্রখ্যাত আইনজীবী মাদার বখ্শ৷
অবশেষে ১৯৫৩ সালের ৩১ মার্চ প্রাদেশিক আইনসভায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য আইন পাস হয়। নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইতরাৎ হোসেন জুবেরীকে সঙ্গে নিয়ে মাদার বখ্শ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো পরিকল্পনা প্রণয়ণ করেন। এরপর শুরু হয় রাবির পথচলা।
পদ্মা তীরবর্তী ওলন্দাজ বাণিজ্য কেন্দ্র ‘বড়কুঠি’-তে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৫৪ সালে ৫ জন ছাত্রী ও ১৫৬ জন ছাত্র নিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয় তার একাডেমিক যাত্রা শুরু করে। শুরুতে রাজশাহী কলেজের বিভিন্ন ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হতে থাকে। ১৯৬৪ সালের মধ্যে বর্তমান মতিহার ক্যাম্পাসে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম স্থানান্তরিত হয়।
বর্তমানে ৩০৩ দশমিক ৮০ হেক্টরের এ বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে ১১৭৭ জন শিক্ষক ও ২০০০ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারী। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ধীরে ধীরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮ হাজার ৩৩০ জনে। এর মধ্যে ছাত্র ২৫ হাজার ৫৭৯ জন ও ছাত্রী ১২ হাজার ৫৫১ জন। বর্তমানে ৯ অনুষদের অধীনে বিভাগ রয়েছে ৫৮টি। বেড়েছে অবকাঠামো। ১২টি একাডেমিক ভবনসহ বর্তমানে রাবির ছাত্রদের থাকার জন্য আবাসিক হল রয়েছে মোট ১১টি ও ছাত্রীদের জন্য রয়েছে ৬টি। এছাড়া গবেষক ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে একটি আন্তর্জাতিক ডরমিটরি।
দিবসটি উপলক্ষে প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিভিন্ন বিভাগের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি আয়োজন করা হয়। তবে করোনা ভাইরাসের কারণে এ বছর বড় পরিসরে কোনো কর্মসূচি হাতে নিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এবার সীমিত পরিসরে কর্মসূচি পালন করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা (অতিরিক্ত দায়িত্বে) অধ্যাপক লুৎফর রহমান জানান, প্রতিবছরই আমরা নানা আয়োজনে দিবসটি উদযাপন করে থাকি। কিন্তু এ বছর করোনা ভাইরাসের কারণে তেমন কোনো আয়োজন করতে পারছি না। দিবসটি উপলক্ষে সকালে পতাকা উত্তোলন এবং এরপর ক্যাম্পাসে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির মধ্যেই এবারের কর্মসূচি সীমাবদ্ধ।