আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চীনা সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ২০ জন জওয়ান নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা এএনআই এ তথ্য জানিয়েছে। এর আগে ভারতের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, সোমবার রাতের সংঘর্ষে এক কর্নেল এবং দুই সেনা নিহত হয়েছে।
ভারতীয় সেনা সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, সোমবার রাতে সংঘর্ষে তিনজন সেনা নিহত হওয়ার পাশাপাশি আরও ১৭ জন গুরুতর আহত হন। হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রায়, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেক উঁচু ও খোলা আকাশের নীচে আহত অবস্থায় দীর্ঘক্ষণ থাকার ফলে তাঁদের মৃত্যু হয়। এছাড়া, ৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এএনআই আরও জানিয়েছে, প্রায় ছয় ঘণ্টা স্থায়ী ওই সংঘর্ষে চীনা সোবাহিনীরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। চীনা বাহিনীর অন্তত ৪৩ জন নিহত নয়তো গুরুতর আহত হয়েছে। তবে চীনা কর্তৃপক্ষ কোনও হতাহতের কথা স্বীকার করেনি।
সংঘর্ষ সম্পর্কে হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, ভারতীয় সীমান্তে চীনের বসানো একটি পোস্ট সরিয়ে দিয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। এই নিয়েই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় বলে জানা গেছে। গালওয়ানে এই সংঘর্ষে কোন আগ্নেয়াস্ত্র ব্যহার করা হয়নি। দুই দেশের সেনারা একে অপরকে পাথর, রড, পেরেক দেওয়া ডাণ্ডা ইত্যাদি দিয়ে আক্রমণ করেছিল। প্রায় ছয় ঘণ্টা ধরে চলে এই সংঘর্ষ।
এদিকে, লাদাখ সীমান্তে সংঘর্ষের ঘটনার ব্যাপারে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে বলা হয়, ‘সোমবার দুই বার সীমান্ত পার হয়ে চীনে ঢুকে পড়ে ভারতীয় সেনারা। চীনা নাগরিকদের আক্রমণ করেছিল তারা। ফলে দুই সীমান্ত রক্ষীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে তিন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন’। ভারতীয় উস্কানির জেরেই সীমান্তে হানাহানি হয়েছে। একইসঙ্গে গালওয়ান উপত্যকা চিরকালই তাদের ছিল বলে দাবি জানিয়েছে চীনের সেনাবাহিনী।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৫ সালে ভারত-চীন সীমান্তে সর্বশেষ নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। সেই সময় অরুণাচল প্রদেশের নিয়ন্ত্রণরেখায় টহলরত চারজন ভারতীয় সেনাকে গুলি করে হত্যা করে এক চীনা সেনা।