নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
সাত বছর আগে আজকের দিনে খুন হন ব্লগার নাজিমুদ্দিন সামাদ। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র ছিলেন তিনি। চার বছর তদন্ত শেষে চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়াসহ নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট। এরপর কেটে গেছে আরও আড়াই বছর। আলোচিত হত্যা মামলাটির বিচার শুরু হয়নি এখনো।
বর্তমানে মামলাটি ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমানের আদালতে বিচারাধীন। সর্বশেষ গত ৩০ মার্চ এ মামলার অভিযোগ গঠনের দিন ধার্য ছিল। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে আটক আসামিদের আদালতে না পাঠিয়ে চিঠি পাঠান কারা কর্তৃপক্ষ। আগামী ২৩ মে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন আদালত। এ নিয়ে অভিযোগ গঠন শুনানির ছয়টি ধার্য তারিখ পেছাল।
মামলার আসামিদের মধ্যে চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়া, আকরাম হোসেন, মো. ওয়ালিউল্লাহ ওরফে ওলি ওরফে তাহেব ওরফে তাহসিন, সাব্বিরুল হক চৌধুরী ওরফে আকাশ ওরফে কনিক ও মাওলানা জুনেদ আহাম্মেদ ওরফে সাব্বির ওরফে জুনায়েদ ওরফে তাহের পলাতক। এ ছাড়া এ মামলায় অন্য চার আসামি রশিদুন নবী ভূঁইয়া ওরফে টিপু ওরফে রাসেল ওরফে রফিক ওরফে রায়হান, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন, মো. আরাফাত রহমান ও মো. শেখ আব্দুল্লাহ কারাগারে আটক রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৬ এপ্রিল রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শেষে মেসে ফেরার পথে লক্ষ্মীবাজারের একরামপুর মোড়ে কুপিয়ে এবং গুলি করে ব্লগার নাজিমুদ্দিনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। পরদিন সূত্রাপুর থানার এসআই মো. নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন। ২০২০ সালের ২০ আগস্ট বহিষ্কৃত মেজর সৈয়দ মো. জিয়াউল হক জিয়াসহ ৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট। ২০২২ সালের ১৭ জানুয়ারি মেজর জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে পলাতক পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। একই বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি তাদের সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দেন। মামলার সূত্রে আরও জানা যায়, ব্লগে লেখালেখির কারণে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্যরা নাজিম উদ্দিনকে হত্যার পরিকল্পনা করে। সংগঠনটির শীর্ষ নেতা ও সামরিক শাখার প্রধান সেনাবাহিনী থেকে বহিষ্কৃত মেজর জিয়ার পরিকল্পনায় এ হত্যা করা হয়। আসামি মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মনের নেতৃত্বে একটি দল হত্যার উদ্দেশে নাজিম উদ্দিনের অবস্থান রেকি করে। মো. শেখ আব্দুল্লাহ হত্যার ভিডিও ধারণ এবং হত্যাকারীদের পালাতে সহযোগিতার জন্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী নজরুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, অভিযোগ গঠন শুনানির দিন বারবার ধার্য করা হলেও আসামিদের কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয় না। আসামিপক্ষ থেকেও এখন আর কোনো যোগাযোগ করা হয় না। ট্রাইব্যুনালের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মো. গোলাম ছারোয়ার খান জাকির বলেন, আসামিদের হাজির না করলে বিচার শুরু হবে না। আগামী তারিখে আসামিদের হাজির করে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু করতে পারব। পরবর্তী সময়ে দ্রুত সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করে মামলাটি নিষ্পত্তি করা হবে।