হজ প্যাকেজ সংশোধনে লিগ্যাল নোটিশ

হজ প্যাকেজ সংশোধনে লিগ্যাল নোটিশ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

হজ প্যাকেজ ২০২৩’ সংশোধন করে নতুন প্যাকেজ ঘোষণা ও বিমানভাড়া কমানোর অনুরোধ জানিয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় ও হজ সংশ্লিষ্টদের লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এছাড়া সরকার হজযাত্রীদের সৌদি ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের টিকিট কিনতে বাধ্য করে। এতে যাত্রীদের স্বাধীনতা খর্ব করা হয়। এ নিয়মেও পরিবর্তন আনতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

রোববার (১২ মার্চ) হাবিবুর রহমান, আব্দুল আজিজ ও আব্দুল হাইয়ের পক্ষে এ নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আল মামুন রাসেল। নোটিশপ্রাপ্তির এক সাপ্তাহের মধ্যে এ বিষয় কার্যকরী পদক্ষেপ না নিলে এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগের সচিব, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব, বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও বলাকা বিমান বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর এ নোটিশ পাঠানো হয়।

নোটিশে বলা হয়েছে, গত ১ ফেব্রুয়ারি হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নির্বাহী কমিটি হজ প্যাকেজ চূড়ান্ত করে ঘোষণা করেন। এ বিষয়ে স্মারক জারি করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। সরকারি ব্যবস্থাপনায় চলতি মৌসুমে হজের খরচ ছয় লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। কোরবানি ছাড়াই এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের জন্য সর্বনিম্ন প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে ছয় লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। এর আগের বছরে যা ছিল পাঁচ লাখ ২২ হাজার ৭৪৪ টাকা। ঘোষিত প্যাকেজ অনুযায়ী- এবার তা প্রায় দেড় লাখ টাকা বাড়ানো হয়। যেখানে বিমানভাড়া দেখানো হয়েছে এক লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা।

এতে আরও বলা হয়, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্যানুসারে ২০১৫ সালে হজের সর্বনিম্ন খরচ ছিল দুই লাখ ৯৬ হাজার ২০৬ টাকা। ২০১৬ সালে তিন লাখ চার হাজার টাকা। ২০১৭ সালে সর্বনিম্ন প্যাকেজ ছিল তিন লাখ ১৯ হাজার টাকা, ২০১৮ সালে তিন লাখ ৩১ হাজার টাকা, ২০১৯ সালে তিন লাখ ৪৫ হাজার টাকা। করোনা মহামারির কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে বাংলাদেশ থেকে হজে যাওয়া পুরোপুরি বন্ধ ছিল। ২০২২ সালে হজ প্যাকেজের মূল্য ছিল পাঁচ লাখ ২১ হাজার ১৫০ টাকা এবং ২০২৩ সালে ছয় লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হিসাব বিবেচনায় নিলে ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে হজের ব্যয় বেড়েছে তিন লাখ ৩৮ হাজার টাকা। অথচ এ বছর সৌদি সরকার হজের আনুষঙ্গিক ব্যয় কমিয়েছে।

নোটিশে আরও বলা হয়েছে, বর্তমানে বাংলাদেশ-সৌদি-বাংলাদেশ রুটে বিমানভাড়া ৭৬ হাজার টাকা থেকে এক লাখ ১০ হাজার টাকা। প্রতি বছর দুই দেশের সরকার হজযাত্রীদের সৌদি ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের টিকিট কিনতে বাধ্য করে। এ কারণে টিকিট কিনতে হজযাত্রীদের স্বাধীনতা খর্ব করা হয়। এছাড়া মোয়াল্লেম খরচ বেশি ধরা হয়েছে। সৌদিতে ভ্রমণ খরচও ধরা হয়েছে। অথচ হাজযাত্রীরা মাত্র নির্দিষ্ট কয়েকটি স্থানে মক্কা ও মদিনায় যান এবং হজ করে দেশে ফিরে আসেন। সৌদিতে বাড়িভাড়া না বাড়লেও এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাড়ানো হয়েছে। আমরা চাই এসব অনাকাঙ্ক্ষিত খরচ কমানো হোক।

‘আমাদের পাশ্ববর্তী রাষ্ট্রগুলোতে এ বছরে হজের খরচ হলো- ইন্দোনেশিয়ায় চার লাখ ৯২ হাজার ৮৮৬ বাংলাদেশি টাকা, কলকাতা থেকে বাংলাদেশি মুদ্রায় পাঁচ লাখ ৪৯ হাজার ৪৬২ টাকা, পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশি মুদ্রায় জনপ্রতি তিন লাখ ১১ হাজার টাকা। তাহলে বাংলাদেশ থেকে কেন এত বেশি হব্র?

হজের খরচ বাড়ানো মানে পরোক্ষভাবে হজে যেতে মানুষকে অনুৎসাহিত করা উল্লেখ করে নোটিশে বলা হয়, এটি মুসলমানদের ধর্মীয় কার্যকলাপে লাগাম টানা। কৌশলে মুসলমানদের ইবাদত থেকে বিরত রাখা হচ্ছে। অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে মুসলমানদের হজ পালনে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। যেখানে পাশ্ববর্তী অমুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র হজ পালনে ভর্তুকি দিয়ে থাকে। তাহলে ৯০ শতাংশ মুসলিমের দেশে কেন ভর্তুকি না দিয়ে বরং অনাকাঙ্ক্ষিত দাম বাড়ানো হচ্ছে। তাই দ্রুত বিমানভাড়া কমানোসহ হজ প্যাকেজ ২০২৩ সংশোধন, পরিবর্তন ও পুনর্নির্ধারণ করে নতুন প্যাকেজ ঘোষণার অনুরোধ জানানো হলো।

Loading

পোষ্টটি প্রয়োজনীয় মনে হলে শেয়ার করতে পারেন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!