ঢাকা , বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নারীর মৃত্যু: টাকার বিনিময়ে জামিন পেলেন আল্লু অর্জুন

অনলাইন নিউজ ডেস্ক
  • আপডেটঃ ০৪:০৮:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ৫৩৩ বার পঠিত

‘পুষ্পা ২’- সিনেমার প্রিমিয়ার দেখতে গিয়ে ভিড়ের মধ্যে পড়ে এক নারীর মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় নিহতের পরিবার অভিযোগ দায়েরের পর গতকাল শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) হায়দারাবাদের বানজারা হিলসের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় অর্জুনকে। গ্রেপ্তাররের পর তেলেঙ্গানা হাইকোর্ট থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেয়েছেন তিনি।

 

আজ শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে জেল থেকে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমে আল্লু বলেন, নিহতের পরিবারের প্রতি আমি ব্যথিত। গোটা ঘটনায় শোকাহত। দেশের আইনকে সম্মান করি। কথা দিচ্ছি, এই দুর্ঘটনার তদন্তে সব সাহায্য করব।

 

এর আগে, এদিনই হায়দরাবাদের নিম্ন আদালত অল্লুকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিলো। পরে গ্রেপ্তারিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এফআইআর খারিজের আবেদন নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অভিনেতা।

 

গত ৪ ডিসেম্বর হায়দরাবাদের সন্ধ্যা থিয়েটারে ‘পুষ্পা ২’-এর প্রিমিয়ারে পদপিষ্ট হয়ে রেবতীর (৩৯) নামের ওই নারীর মৃত্যু হয়। সেই ঘটনায় মামলা করেন তার স্বামী ভাস্কর। এর প্রেক্ষিতে অর্জুনকে শুক্রবার সকালে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অল্লুসহ মোট সাত জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

 

এ ঘটনায় আরো দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে রয়েছেন সন্ধ্যা থিয়েটারের মালিকও। বাকি অভিযুক্তদেরও অন্তর্বর্তী জামিন দিয়েছে হাইকোর্ট।

 

আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, এই মামলায় বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, নিহতের পরিবারের প্রতি আদালতের সমবেদনা রয়েছে। কিন্তু অভিযুক্তকে এর ফলে কীভাবে দোষী বলা যায়? যে যে ধারায় মামলা করা হয়েছে, সেগুলো প্রযোজ্য হচ্ছে না। অভিনেতা বলে তার ব্যক্তি অধিকারে হস্তক্ষেপ করা যায় না। আদালত বলছে, নাগরিক হিসাবে তারও স্বাধীনতা ভোগের অধিকার রয়েছে।

 

মামলায় ওই নারীর স্বামী ভাস্কর জানিয়েছেন, স্ত্রী, ৯ বছরের ছেলে ও আট বছরের মেয়েকে নিয়ে ‘পুষ্পা ২’ -এর প্রিমিয়ার উপলক্ষ্যে ঘটনার দিন সন্ধ্যায় থিয়েটারে গিয়েছিলেন তিনি।

 

ভাস্করের অভিযোগ, রাত ৯টা ১০ মিনিটে তারা টিকিট কেটে ছবি দেখতে হলে ঢুকেছিলেন। প্রেক্ষাগৃহে প্রচুর ভিড় ছিলো। রাত ৯টা ৪০ মিনিটে অল্লু সেখানে আসেন। ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিলো কর্তৃপক্ষ। অভিনেতার নিরাপত্তারক্ষীরা ভিড় সরানোর চেষ্টা করেন। এই সময় ধাক্কাধাক্কি হয়। রেবতী এবং তার পুত্র সাই তেজ প্রেক্ষাগৃহের নিচের ব্যালকনিতে ছিলেন। তারা শ্বাস নিতে পারছিলেন না। পরে দু’জনেই ভিড়ের মধ্যে পড়ে যান। ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে রেবতীর মৃত্যু হয়।

 

শিশুটিকে দুর্গাবাই দেশমুখ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর নিয়ে যাওয়া হয় কেআইএমএস হাসপাতালে।

 

ভাস্করের অভিযোগ, আগে থেকে পর্যাপ্ত পরিকল্পনা এবং ব্যবস্থা ছাড়াই অভিনেতা হলে চলে এসেছিলেন। প্রেক্ষাগৃহ কর্তৃপক্ষও ভিড় নিয়ন্ত্রণের বন্দোবস্ত করেননি। তাই এমন ঘটনা ঘটেছে। অভিনেতা এ দায় এড়াতে পারেন না।

 

ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৫, ১১৮ (১), ৩ (৫) ধারায় অল্লু অর্জুনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৫ ধারায় অনিচ্ছাকৃত খুনের কথা বলা রয়েছে। ১১৮ (১) ধারায় অস্ত্রের মাধ্যমে (যন্ত্র, আগুন, ক্ষতিকর গ্যাস, বিষ ইত্যাদি) মৃত্যু ঘটানোর কথা বলা আছে।

 

এদিকে নিহতের পরিবারকে ২৫ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন অর্জুন।

অর্থআদালতডটকম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া অন্য কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।

error: Content is protected !!

নারীর মৃত্যু: টাকার বিনিময়ে জামিন পেলেন আল্লু অর্জুন

আপডেটঃ ০৪:০৮:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

‘পুষ্পা ২’- সিনেমার প্রিমিয়ার দেখতে গিয়ে ভিড়ের মধ্যে পড়ে এক নারীর মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় নিহতের পরিবার অভিযোগ দায়েরের পর গতকাল শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) হায়দারাবাদের বানজারা হিলসের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় অর্জুনকে। গ্রেপ্তাররের পর তেলেঙ্গানা হাইকোর্ট থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেয়েছেন তিনি।

 

আজ শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে জেল থেকে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমে আল্লু বলেন, নিহতের পরিবারের প্রতি আমি ব্যথিত। গোটা ঘটনায় শোকাহত। দেশের আইনকে সম্মান করি। কথা দিচ্ছি, এই দুর্ঘটনার তদন্তে সব সাহায্য করব।

 

এর আগে, এদিনই হায়দরাবাদের নিম্ন আদালত অল্লুকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিলো। পরে গ্রেপ্তারিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এফআইআর খারিজের আবেদন নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অভিনেতা।

 

গত ৪ ডিসেম্বর হায়দরাবাদের সন্ধ্যা থিয়েটারে ‘পুষ্পা ২’-এর প্রিমিয়ারে পদপিষ্ট হয়ে রেবতীর (৩৯) নামের ওই নারীর মৃত্যু হয়। সেই ঘটনায় মামলা করেন তার স্বামী ভাস্কর। এর প্রেক্ষিতে অর্জুনকে শুক্রবার সকালে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অল্লুসহ মোট সাত জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

 

এ ঘটনায় আরো দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে রয়েছেন সন্ধ্যা থিয়েটারের মালিকও। বাকি অভিযুক্তদেরও অন্তর্বর্তী জামিন দিয়েছে হাইকোর্ট।

 

আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, এই মামলায় বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, নিহতের পরিবারের প্রতি আদালতের সমবেদনা রয়েছে। কিন্তু অভিযুক্তকে এর ফলে কীভাবে দোষী বলা যায়? যে যে ধারায় মামলা করা হয়েছে, সেগুলো প্রযোজ্য হচ্ছে না। অভিনেতা বলে তার ব্যক্তি অধিকারে হস্তক্ষেপ করা যায় না। আদালত বলছে, নাগরিক হিসাবে তারও স্বাধীনতা ভোগের অধিকার রয়েছে।

 

মামলায় ওই নারীর স্বামী ভাস্কর জানিয়েছেন, স্ত্রী, ৯ বছরের ছেলে ও আট বছরের মেয়েকে নিয়ে ‘পুষ্পা ২’ -এর প্রিমিয়ার উপলক্ষ্যে ঘটনার দিন সন্ধ্যায় থিয়েটারে গিয়েছিলেন তিনি।

 

ভাস্করের অভিযোগ, রাত ৯টা ১০ মিনিটে তারা টিকিট কেটে ছবি দেখতে হলে ঢুকেছিলেন। প্রেক্ষাগৃহে প্রচুর ভিড় ছিলো। রাত ৯টা ৪০ মিনিটে অল্লু সেখানে আসেন। ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিলো কর্তৃপক্ষ। অভিনেতার নিরাপত্তারক্ষীরা ভিড় সরানোর চেষ্টা করেন। এই সময় ধাক্কাধাক্কি হয়। রেবতী এবং তার পুত্র সাই তেজ প্রেক্ষাগৃহের নিচের ব্যালকনিতে ছিলেন। তারা শ্বাস নিতে পারছিলেন না। পরে দু’জনেই ভিড়ের মধ্যে পড়ে যান। ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে রেবতীর মৃত্যু হয়।

 

শিশুটিকে দুর্গাবাই দেশমুখ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর নিয়ে যাওয়া হয় কেআইএমএস হাসপাতালে।

 

ভাস্করের অভিযোগ, আগে থেকে পর্যাপ্ত পরিকল্পনা এবং ব্যবস্থা ছাড়াই অভিনেতা হলে চলে এসেছিলেন। প্রেক্ষাগৃহ কর্তৃপক্ষও ভিড় নিয়ন্ত্রণের বন্দোবস্ত করেননি। তাই এমন ঘটনা ঘটেছে। অভিনেতা এ দায় এড়াতে পারেন না।

 

ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৫, ১১৮ (১), ৩ (৫) ধারায় অল্লু অর্জুনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৫ ধারায় অনিচ্ছাকৃত খুনের কথা বলা রয়েছে। ১১৮ (১) ধারায় অস্ত্রের মাধ্যমে (যন্ত্র, আগুন, ক্ষতিকর গ্যাস, বিষ ইত্যাদি) মৃত্যু ঘটানোর কথা বলা আছে।

 

এদিকে নিহতের পরিবারকে ২৫ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন অর্জুন।