ঢাকা , বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জনপ্রিয় অভিনেত্রী অঞ্জনা মারা গেছেন

অনলাইন নিউজ ডেস্ক
  • আপডেটঃ ০৫:৪০:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ৫৪৩ বার পঠিত

শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন ঢালিউডের এক সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা অঞ্জনা রহমান। তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর।

 

গতকাল শুক্রবার (০৩ জানুয়ারি) দিবাগত রাত আনুমানিক ১টা ১০ মিনিটে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

 

গতকাল সন্ধ্যা থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে শুরু করেছিলেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নেতা ও সদস্যরা। সভাপতি মিশা সওদাগর অঞ্জনার চিকিৎসার জন্য সমিতির মাধ্যমে অর্থ সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, চলচ্চিত্রের সবাই অঞ্জনার খোঁজ-খবর নিচ্ছে। কিন্তু চিকিৎসকেরা জানিয়ে দিয়েছিলেন, তার ফেরার আশা খুব কম।

 

গত এক সপ্তাহ ধরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের সিসিইউ বিভাগে চিকিৎসাধীন ছিলেন এ অভিনেত্রী। অবস্থার অবনতি হলে গত বুধবার (০১ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে তাকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ভর্তি করে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়।

 

অভিনেত্রীর ছেলে নিশাত মণি সাংবাদিকদের জানান, জ্বর ও রক্তে ইনফেকশনজনিত কারণে গত ডিসেম্বরের শুরুর দিকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাকে।

 

‘পরিণীতা’ ও ‘গাংচিল’ সিনেমার জন্য দু’বার জাতীয় পুরস্কার পাওয়া চিত্রনায়িকা অঞ্জনা এক সময় বাংলাদেশের ঘরে ঘরে ছিলেন অতি পরিচিত মুখ। সিনেমায় আসার আগেই তিনি পরিচিতি পান নৃত্যশিল্পী হিসেবে।

 

ঢাকাই সিনেমার এক সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা অঞ্জনা ১৯৭৬ সালে ‘দস্যু বনহুর’ সিনেমার মাধ্যমে সিনেমায় পা রাখেন। এই সিনেমার পর টানা দুই দশক কাজ করেছেন অঞ্জনা। এ পর্যন্ত তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন।

 

অঞ্জনা নৃত্যশিল্পী থেকে নায়িকা হয়ে সর্বাধিক যৌথ প্রযোজনা এবং বিদেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। তিনি বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কার ছবিতে অভিনয় করেছেন। দেশের বাইরে ভারতের মিঠুন চক্রবর্তি, পাকিস্তানের নাদিম, জাভেদ শেখ, ফয়সাল এবং নেপালের শিবশ্রেষ্ঠাসহ একাধিক নায়কের বিপরীতে অভিনয় করেছেন।

 

ঢাকাই ছবির নায়করাজ রাজ্জাকের সঙ্গে ৩০টি ছবিতে অভিনয় করেছেন অঞ্জনা। এর মধ্যে ‘অশিক্ষিত’, ‘রজনীগন্ধা’, ‘আশার আলো’, ‘জিঞ্জির’, ‘আনারকলি’, ‘বিধাতা’, ‘বৌরানী’, ‘সোনার হরিণ’, ‘মানা’, ‘রামরহিমজন’, ‘সানাই’, ‘সোহাগ’, ‘মাটির পুতুল’, ‘সাহেব বিবি গোলাম’ ও ‘অভিযান’ উল্লেখযোগ্য। এছাড়া তাঁর সময়ের প্রথম সারির সব নায়কদের সাথেই কাজ করেছেন তিনি। জাতীয় পুরস্কারের পাশাপাশি দু’বার বাচসাস, নৃত্যে দু’বার শ্রেষ্ঠ জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন।

 

বাংলা চলচ্চিত্রের সোনালি সময়ের এই নায়িকা দীর্ঘদিন ধরেই সিনেমা থেকে সরে ছিলেন। সিনেমায় কাজ না করলেও তাকে নিয়মিত দেখা যেত চলচ্চিত্রের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে।

 

এদিকে শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর জানিয়েছেন, ঢালিউডের এক সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা অঞ্জনা রহমানকে শেষ বারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে এফডিসি প্রাঙ্গণে নেওয়া হবে। এরপর বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে তার মরদে।

 

জানা গেছে, বেলা ১১টায় শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তার মরদেহ এফডিসিতে নিয়ে যাওয়া হবে। বাদ জোহর এফডিসি প্রাঙ্গণে হবে প্রথম জানাজা। দ্বিতীয় জানাজা তেজগাঁওয়ে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে। এরপর বনানী কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হবে।

অর্থআদালতডটকম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া অন্য কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।

error: Content is protected !!

জনপ্রিয় অভিনেত্রী অঞ্জনা মারা গেছেন

আপডেটঃ ০৫:৪০:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ জানুয়ারী ২০২৫

শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন ঢালিউডের এক সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা অঞ্জনা রহমান। তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর।

 

গতকাল শুক্রবার (০৩ জানুয়ারি) দিবাগত রাত আনুমানিক ১টা ১০ মিনিটে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

 

গতকাল সন্ধ্যা থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে শুরু করেছিলেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নেতা ও সদস্যরা। সভাপতি মিশা সওদাগর অঞ্জনার চিকিৎসার জন্য সমিতির মাধ্যমে অর্থ সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, চলচ্চিত্রের সবাই অঞ্জনার খোঁজ-খবর নিচ্ছে। কিন্তু চিকিৎসকেরা জানিয়ে দিয়েছিলেন, তার ফেরার আশা খুব কম।

 

গত এক সপ্তাহ ধরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের সিসিইউ বিভাগে চিকিৎসাধীন ছিলেন এ অভিনেত্রী। অবস্থার অবনতি হলে গত বুধবার (০১ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে তাকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ভর্তি করে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়।

 

অভিনেত্রীর ছেলে নিশাত মণি সাংবাদিকদের জানান, জ্বর ও রক্তে ইনফেকশনজনিত কারণে গত ডিসেম্বরের শুরুর দিকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাকে।

 

‘পরিণীতা’ ও ‘গাংচিল’ সিনেমার জন্য দু’বার জাতীয় পুরস্কার পাওয়া চিত্রনায়িকা অঞ্জনা এক সময় বাংলাদেশের ঘরে ঘরে ছিলেন অতি পরিচিত মুখ। সিনেমায় আসার আগেই তিনি পরিচিতি পান নৃত্যশিল্পী হিসেবে।

 

ঢাকাই সিনেমার এক সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা অঞ্জনা ১৯৭৬ সালে ‘দস্যু বনহুর’ সিনেমার মাধ্যমে সিনেমায় পা রাখেন। এই সিনেমার পর টানা দুই দশক কাজ করেছেন অঞ্জনা। এ পর্যন্ত তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন।

 

অঞ্জনা নৃত্যশিল্পী থেকে নায়িকা হয়ে সর্বাধিক যৌথ প্রযোজনা এবং বিদেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। তিনি বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কার ছবিতে অভিনয় করেছেন। দেশের বাইরে ভারতের মিঠুন চক্রবর্তি, পাকিস্তানের নাদিম, জাভেদ শেখ, ফয়সাল এবং নেপালের শিবশ্রেষ্ঠাসহ একাধিক নায়কের বিপরীতে অভিনয় করেছেন।

 

ঢাকাই ছবির নায়করাজ রাজ্জাকের সঙ্গে ৩০টি ছবিতে অভিনয় করেছেন অঞ্জনা। এর মধ্যে ‘অশিক্ষিত’, ‘রজনীগন্ধা’, ‘আশার আলো’, ‘জিঞ্জির’, ‘আনারকলি’, ‘বিধাতা’, ‘বৌরানী’, ‘সোনার হরিণ’, ‘মানা’, ‘রামরহিমজন’, ‘সানাই’, ‘সোহাগ’, ‘মাটির পুতুল’, ‘সাহেব বিবি গোলাম’ ও ‘অভিযান’ উল্লেখযোগ্য। এছাড়া তাঁর সময়ের প্রথম সারির সব নায়কদের সাথেই কাজ করেছেন তিনি। জাতীয় পুরস্কারের পাশাপাশি দু’বার বাচসাস, নৃত্যে দু’বার শ্রেষ্ঠ জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন।

 

বাংলা চলচ্চিত্রের সোনালি সময়ের এই নায়িকা দীর্ঘদিন ধরেই সিনেমা থেকে সরে ছিলেন। সিনেমায় কাজ না করলেও তাকে নিয়মিত দেখা যেত চলচ্চিত্রের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে।

 

এদিকে শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর জানিয়েছেন, ঢালিউডের এক সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা অঞ্জনা রহমানকে শেষ বারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে এফডিসি প্রাঙ্গণে নেওয়া হবে। এরপর বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে তার মরদে।

 

জানা গেছে, বেলা ১১টায় শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তার মরদেহ এফডিসিতে নিয়ে যাওয়া হবে। বাদ জোহর এফডিসি প্রাঙ্গণে হবে প্রথম জানাজা। দ্বিতীয় জানাজা তেজগাঁওয়ে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে। এরপর বনানী কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হবে।