ইসলামিক আইন-বিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার দাবিতে ইসলামী সমাজ

- আপডেটঃ ০১:৩০:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ মে ২০২৫
- / ৮৪৯ বার পঠিত
আল্লাহু আকবার- সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও নিরংকুশ কর্তৃত্ব একমাত্র আল্লাহর (মানুষের নয়), এটাই মহাসত্য। মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্রসমূহের ক্ষমতাসীনদেরকে ইসলাম প্রতিষ্ঠার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ ও মানবিক শান্তিসংঘ গঠনের এবং দেশবাসী সকলকে ইসলাম প্রতিষ্ঠায় ‘ইসলামী সমাজ’-এ শামিল হওয়ার আহ্বান। বিতাড়িত অভিশপ্ত শয়তানের কু-মন্ত্রণা হতে আল্লাহর নিকট আপ্রায় প্রার্থনা করে, অতিশয় দেহেরবান ও দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
সম্মানিত দেশবাসী ভাই ও বোনেরা,
মহাসত্যের চরম সীমালঙ্ঘনকারী ইসরায়েলের ইয়াহুদী সরকার ও তার বাহিনী গোটা মুসলিম বিশ্বের ১৯০ কোটি মানুষকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ফিলিস্তিন ভূখন্ড এবং মুসলিমদের প্রথম কিবলা মাসজিদ-আল-আকসা দখলে নেয়ার জন্য ফিলিস্তিনি নিরস্ত্র জনগণের জান ও মালের উপর বর্বরোচিত হামলার মাধ্যমে নৃশংস গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে- এ হামলা মূলতঃ গোটা মুসলিম উম্মাহর উপর। মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্র সমূহের মুসলিম পরিচয়দানকারী লোকেরা মানুষের সার্বভৌমত্ব ভিত্তিক আল কুরআন বিরোধী সংবিধান মেনে চলার মাধ্যমে সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন এবং পরিচালনায় মানুষকে রব গ্রহণ করেছে।
এর ফলে তারা আল্লাহ্ প্রদত্ত কল্যাণকর ও পরিপূর্ণ একমাত্র জীবন ব্যবস্থা ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা থেকে বিচ্যুত হয়ে মানুষের’ই গোলামে পরিণত হয়েছে বিধায়, তাদের এ ভয়াবহ নাজুক অবস্থা। আল্লাহর সার্বভৌমত্বের ভিত্তিতে গঠিত ও পরিচালিত ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করলেই আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের বিশেষ রহমাত ও নুসরাতে (সাহায্যে) পুরো বিশ্বের নির্যাতিত সকল মানুষকে মহাসত্যের সীমালঙ্ঘনকারী এবং নিরিহ, নিরস্ত্র মানুষের জান-মালের উপর আক্রমণকারী সকল শয়তানি ও অপশক্তির ষড়যন্ত্র থেকে মুক্ত করা সম্ভব হবে। এ লক্ষ্যে ‘ইসলামী সমাজ’ আল্লাহর নির্দেশিত এবং তাঁরই রাসুল হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর প্রদর্শিত পদ্ধতিতে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন ও সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে।
গণতন্ত্র, রাজতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ প্রভৃতি সকল মানব রচিত ব্যবস্থাই বাতিল দ্বীন এবং ইসলাম বিরোধী মতবাদ ও জাহান্নামের পথ বিধায়; এসবের বিরুদ্ধে ইসলামী সমাজের নেতৃবৃন্দ সহ সকল সদস্য ও সদস্যাদের দৃঢ় অবস্থান। মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্র সমূহের ক্ষমতাসীনদের প্রতি আমরা আন্তরিক আহবান জানাচ্ছি- আপনারা মানুষের সার্বভৌমত্ব ভিত্তিক মানব রচিত ব্যবস্থা ত্যাগ করুন, আল-কুরআনকে সংবিধান মেনে ইসলামী শরীয়ার আইন-বিধান দিয়ে সমাজ, রাষ্ট্র গঠন ও পরিচালনা করুন এবং একমাত্র সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর সার্বভৌমত্বের ভিত্তিতে মানবিক শান্তিসংঘ (Humanitarian Peace Union) গঠন করে ইসরায়েলী সরকারসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত সকল অপশক্তিকে দমন ও নির্মূলের কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
বাংলাদেশের মানুষ সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন এবং পরিচালনায় ইসলামের পরিবর্তে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, সেক্যুলারিজম প্রভৃতি মানব রচিত ব্যবস্থা মেনে চলার মাধ্যমে মানুষের’ই সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও কর্তৃত্বের অধীনে বন্দি হয়ে আল্লাহর পরিবর্তে মানুষকে রব মেনে মানুষের’ই দাসত্ব করছে। যার কারণে দুর্নীতি, বৈষম্য ও মানবতা বিরোধী সকল অপরাধের মাত্রা বেড়েই চলছে। দেশ স্বাধীনের ৫৪ বছরে বিভিন্ন সময়ে জালিম শাসকগোষ্ঠী ও তাদের সমর্থকদের অপকর্ম এবং দেশবাসীর মানব রচিত ব্যবস্থা মেনে চলার কারণে জাতীয় জীবনে নাজুক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে এবং জনগণের জান ও মালের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়েছে। কিন্তু এ দেশের মানুষ সাবধান ও সতর্ক হয়নি এবং আল্লাহর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ তথা মানুষের সার্বভৌমত্ব ভিত্তিক মানব রচিত ব্যবস্থা ত্যাগ করে সমাজ ও রাষ্ট্রে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব ভিত্তিক দ্বীন-ইসলামকে সার্বিকভাবে প্রতিষ্ঠার যথাযথ দায়িত্ব পালন করেনি। ফলে নামায, রোযা, হজ্জ,যাকাতের আমল করা সত্ত্বেও তারা জাহিলিয়্যাতের মধ্যেই অবস্থান করছে। এই অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে আখিরাতে নিশ্চিত ঠিকানা হবে জাহান্নাম, যা একজন মানুষের জন্য চূড়ান্ত মহাক্ষতি।
সুতরাং, মানব রচিত সকল ব্যবস্থা তথা জাহিলিয়্যাত ত্যাগ করে ব্যক্তিগত জীবনের পাশাপাশি সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলামকে সার্বিকভাবে গ্রহণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা না করলে দেশ ও জাতির মানুষ আল্লাহর ভয়াবহ আযাব-গজবের শিকার হয়ে ধ্বংস হয়ে যাবে। আর ঈমানদাররা যদি জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে আমালে সালেহ- ইসলাম প্রতিষ্ঠার যথাযথ প্রচেষ্টা না করে তবে তারাও দায়িত্বে অবহেলার জন্য রবের পাকড়াও থেকে রেহাই পাবে না। অতএব, আল্লাহর ক্রোধের শিকার হয়ে তাঁর ভয়াবহ আযাব-গজবের সম্মুখীন হওয়া থেকে রক্ষা পেয়ে দুনিয়ার জীবনে কল্যাণ, শাস্তি ও আখিরাতে জাহান্নামের মহাক্ষতি থেকে রক্ষা পেয়ে জান্নাত লাভের লক্ষ্যে আল্লাহর নির্দেশিত। এবং তাঁরই রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সা.) এর প্রদর্শিত শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিতে ইসলাম প্রতিষ্ঠায় ঈমানদারদের সহীহ আন্দোলনের প্লাটফর্ম ‘ইসলামী সমাজ’-এ দল মত নির্বিশেষে সকলকে শামিল হওয়ার আন্তরিক আহবান জানাচ্ছি।
আপনারা সকলে কল্যাণ ও মুক্তির পথ গ্রহণ করুন এবং দৃঢ়তার সাথে স্লোগানে স্লোগানে আওয়াজ তুলুন-
০১) রাব্বাকা ফাকাব্বির- আল্লাহু আকবার।
০২) আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার সার্বভৌমত্ব একমাত্র আল্লাহর।
০৩) আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো সার্বভৌমত্ব- মানি না মানবো না।
০৪) আল-কুরআন বিরোধী কোন সংবিধান- মানি না মানবো না।
০৫) আল-কুরআন বিরোধী সংবিধান মানবে যারা- জাহান্নামে যাবে তারা।
০৬) গণতন্ত্রের সমর্থন, জোট-ভোট, নির্বাচন ঈমান, আমল কাংসের কারণ।
০৭) গণতন্ত্র মানবে যারা-জাহান্নামে যাবে তারা।
০৮) ইসলামী সমাজ দিচ্ছে ডাক- মানব রচিত ব্যবস্থা নিপাত যাক।
০৯) ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলা ও গণহত্যা- বন্ধ কর, করতে হবে।
১০) গণহত্যা ও নৃশংসতা বন্ধে দরকার- আল্লাহর বিধানের সরকার।
১১) মানুষের কল্যাণে দরকার- আল্লাহর বিধানের সরকার।
১২) সরকার, প্রশাসন, জনতা ইসলামী সমাজের সাথে গড়ে তোল একতা।
সার্বভৌম ক্ষমতার একমাত্র মালিক সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ রাব্বুল আলামীন’ই আমাদের একমাত্র সহায় ও সাহায্যকারী। তিনি আমাদের সকলকে সঠিক পথে চলার তৌফিক দিন। আমীন। সকল মানুষের সার্বিক কল্যাণ কামনায়-আল্লাহরই সার্বভৌমত্বের ভিত্তিতে তাঁরই আইন-বিধানের প্রতিনিধিত্বকারী নেতা;
সৈয়দ হুমায়ূন কবীর
আমীর, ইসলামী সমাজ।
ইসলামী সমাজ
নীতি ও আদর্শের ভিত্তিতে সকল মানুষের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল।
যোগাযোগ। কেন্দ্রীয় কার্যালয়। কুশিয়ারা বাজার, রায়পুর, দাউদকান্দি, কুমিল্লা। ঢাকা অফিস। ৪নং দক্ষিণ বাসাবো