ঢাকা , বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২০২৩ সালে সড়কে ঝরেছে ৭,৯০২ জনের প্রাণ

অনলাইন নিউজ ডেস্ক
  • আপডেটঃ ০৬:৫৬:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ৬৬৮ বার পঠিত

২০২৩ সালে দেশে ৬ হাজার ২৬১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ৯০২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ১০ হাজার ৩৭২ জন। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল গতকাল রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর–রুনি মিলনায়তনে এই হিসাব তুলে ধরেছে।

 

রোববার (১৪ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে যানবাহন দুর্ঘটনার এসব তথ্য তুলে ধরেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী।

 

বছরব্যাপী পত্রিকা, টেলিভিশনসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে জানায় সংগঠনটি।

 

সমিতির হিসাবে, গত বছর সড়ক, রেল ও নৌপথ মিলিয়ে মোট ৬ হাজার ২৬১টি দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ৭ হাজার ৯০২ জন, আহত হয়েছেন ১০ হাজার ৩৭২ জন। একই সময় রেলপথে ৫২০টি দুর্ঘটনায় ৫১২ জন নিহত, ৪৭৫ জন আহত হয়েছে। নৌপথে ১৪৮টি দুর্ঘটনায় ৯১ জন নিহত, ১৫২ জন আহত এবং ১০৯ জন নিখোঁজ রয়েছে। একই সময়ে ২ হাজার ৩১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২ হাজার ১৫২ জন নিহত ও ১ হাজার ৩৩৯ জন আহত হয়েছে। যা মোট দুর্ঘটনার ৩২.৪৩ শতাংশ, নিহতের ২৭.২৩ শতাংশ ও আহতের ১২.৯০ শতাংশ।

 

সড়ক, রেল ও নৌপথে সর্বমোট ৬ হাজার ৯২৯টি দুর্ঘটনায় ৮ হাজার ৫০৫ জন নিহত এবং ১০ হাজার ৯৯৯ জন আহত হয়েছে। বিগত ৯ বছরে নিবন্ধিত যানবাহনের পাশাপাশি ছোট যানবাহন বিশেষ করে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের সংখ্যা ৪ থেকে ৫ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি ইজিবাইক, মোটরসাইকেল ও ত্রি-হুইলার সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে অবাধে চলাচলের কারণে সড়কে দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানি বাড়ছে।

 

সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ১ হাজার ৯৫০ জন চালক, ৯৬৮ জন পথচারী, ৪৮৫ জন পরিবহণ শ্রমিক, ৬৯৭ জন শিক্ষার্থী, ৯৭ জন শিক্ষক, ১৫৪ জন বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য, ৯৮৫ জন নারী, ৬১২ জন শিশু, ৩০ জন সাংবাদিক, ৩২ জন চিকিৎসক, ১৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, ৮ জন আইনজীবী ও ১০ জন প্রকৌশলী এবং ১১১ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে।

 

এই সময়ে সংঘটিত দুর্ঘটনায় সর্বমোট ৮ হাজার ৫৫০টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে, যার ১৬.১৫ শতাংশ বাস, ২৪.৮৪ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ৫.৯১ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস, ৫.৩৯ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ২৬.০২ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১৪.৪৭ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৭.১৯ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।

 

সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৫২.৮৩ শতাংশ পথচারীকে গাড়ি চাপা, ২০.৫ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৪.২৯ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ১১.৪ শতাংশ বিবিধ কারণে, ০.২৭ শতাংশ যানবাহনের চাকায় ওড়না প্যাঁচিয়ে এবং ০.৬৮ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

 

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এই বছর মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৩৪.৮৬ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২৮.৪১ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৮.৫ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৬.৩২ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১.১১ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে, ০.৬৮ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়েছে।

 

বিগত বছরের চেয়ে বিদায়ী বছরে ছোট যানবাহনের সংখ্যা হঠাৎ কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাওয়া ও এসব যানবাহন অবাধে চলাচলের কারণে ফিডার রোডে ৫৫.১৯ শতাংশ, জাতীয় মহাসড়কে ১৪.৩৩ শতাংশ, রেলক্রসিং-এ ০.১৬ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এবার আঞ্চলিক মহাসড়কে ৪৯.৩৩ শতাংশ দুর্ঘটনা কমেছে।

 

২০২৩ সালে ঢাকা বিভাগে ১ হাজার ৭৩৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৭১২ জন নিহত ও ২ হাজার ৩৮১ জন আহত হয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ২৩৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১ হাজার ২০৫ জন নিহত ও ২ হাজার ২৯৪ জন আহত হয়েছে। খুলনা বিভাগে ৭৬৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭৬৪ জন নিহত ও ১০৭৮ জন আহত হয়েছে। বরিশাল বিভাগে ৩৮১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৭৯ জন নিহত ও ৯৯২ জন আহত হয়েছে। ময়মনসিংহ বিভাগে ৪১৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৬৪ জন নিহত ও ৬৬৫ জন আহত হয়েছে। সিলেট বিভাগে ৩৭১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৩ জন নিহত ও ৯২৬ জন আহত হয়েছে। রংপুর বিভাগে ৫৬৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬২৬ জন নিহত ও ৮৬৮ জন আহত হয়েছে। রাজশাহী বিভাগে ৭৮৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭৯৩ জন নিহত ও ১ হাজার ১৬৮ জন আহত হয়েছে।

 

দুর্ঘটনার কারণ : বেপরোয়া গতি, বিপজ্জনক অভারটেকিং, রাস্তাঘাটের নির্মাণ ত্রুটি, ফিটনেসবিহীন যানবাহনের অবাধে চলাচল, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চালকের অদক্ষতা, যানবাহন চালক ও মালিকের বেপরোয়া মনোভাব, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেডফোন ব্যবহার, মাদক সেবন করে যানবাহন চালানো, রেলক্রসিং ও মহাসড়কে হঠাৎ ফিডার রোড থেকে যানবাহন উঠে আসা, রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকা, ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ, ট্রাফিক আইন অমান্য করা, ছোট যানবাহনের ব্যাপক বৃদ্ধি, সড়কে চাঁদাবাজি, রাস্তার উপর হাট-বাজার, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন চালানো, চালকের নিয়োগ ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকাকে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে তুলে ধরেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

 

সুপারিশ : দুর্ঘটনা রোধে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

 

১. সরকারের প্রথম অগ্রাধিকার প্রকল্পে সড়ক নিরাপত্তার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা।

২. নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দ্রুত সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা।

৩. সড়ক নিরাপত্তায় বাজেট বাড়ানো, সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে সড়ক নিরাপত্তা ইউনিট শক্তিশালী করা।

৪. দেশের সড়ক–মহাসড়কে রোড সাইন, ট্রাফিক চিহ্ন স্থাপন করা। জেব্রা ক্রসিং ও আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা।

৫. চালকদের পেশাদার ট্রেনিং ও নৈতিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা।

৬. অনিয়ম–দুর্নীতি ও চাঁদাবাজি বন্ধ করা; গাড়ির নিবন্ধন, ফিটনেস ও চালকদের লাইসেন্স প্রদানের পদ্ধতি আধুনিকায়ন করা।

৭. সড়ক দুর্ঘটনায় আর্থিক সহায়তা তহবিলে আবেদনের সময়সীমা ৬ মাস নির্ধারণ করা।

৮. দেশব্যাপী পর্যাপ্ত মানসম্মত নতুন বাস সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নেওয়া।

৯. ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণের জন্য ট্রাফিক ট্রেনিং একাডেমি গড়ে তোলা।

১০. মহাসড়কের রোড ডিভাইডার পর্যাপ্ত উঁচু করা।

অর্থআদালতডটকম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া অন্য কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।

error: Content is protected !!

২০২৩ সালে সড়কে ঝরেছে ৭,৯০২ জনের প্রাণ

আপডেটঃ ০৬:৫৬:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৪

২০২৩ সালে দেশে ৬ হাজার ২৬১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ৯০২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ১০ হাজার ৩৭২ জন। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল গতকাল রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর–রুনি মিলনায়তনে এই হিসাব তুলে ধরেছে।

 

রোববার (১৪ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে যানবাহন দুর্ঘটনার এসব তথ্য তুলে ধরেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী।

 

বছরব্যাপী পত্রিকা, টেলিভিশনসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে জানায় সংগঠনটি।

 

সমিতির হিসাবে, গত বছর সড়ক, রেল ও নৌপথ মিলিয়ে মোট ৬ হাজার ২৬১টি দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ৭ হাজার ৯০২ জন, আহত হয়েছেন ১০ হাজার ৩৭২ জন। একই সময় রেলপথে ৫২০টি দুর্ঘটনায় ৫১২ জন নিহত, ৪৭৫ জন আহত হয়েছে। নৌপথে ১৪৮টি দুর্ঘটনায় ৯১ জন নিহত, ১৫২ জন আহত এবং ১০৯ জন নিখোঁজ রয়েছে। একই সময়ে ২ হাজার ৩১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২ হাজার ১৫২ জন নিহত ও ১ হাজার ৩৩৯ জন আহত হয়েছে। যা মোট দুর্ঘটনার ৩২.৪৩ শতাংশ, নিহতের ২৭.২৩ শতাংশ ও আহতের ১২.৯০ শতাংশ।

 

সড়ক, রেল ও নৌপথে সর্বমোট ৬ হাজার ৯২৯টি দুর্ঘটনায় ৮ হাজার ৫০৫ জন নিহত এবং ১০ হাজার ৯৯৯ জন আহত হয়েছে। বিগত ৯ বছরে নিবন্ধিত যানবাহনের পাশাপাশি ছোট যানবাহন বিশেষ করে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের সংখ্যা ৪ থেকে ৫ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি ইজিবাইক, মোটরসাইকেল ও ত্রি-হুইলার সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে অবাধে চলাচলের কারণে সড়কে দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানি বাড়ছে।

 

সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ১ হাজার ৯৫০ জন চালক, ৯৬৮ জন পথচারী, ৪৮৫ জন পরিবহণ শ্রমিক, ৬৯৭ জন শিক্ষার্থী, ৯৭ জন শিক্ষক, ১৫৪ জন বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য, ৯৮৫ জন নারী, ৬১২ জন শিশু, ৩০ জন সাংবাদিক, ৩২ জন চিকিৎসক, ১৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, ৮ জন আইনজীবী ও ১০ জন প্রকৌশলী এবং ১১১ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে।

 

এই সময়ে সংঘটিত দুর্ঘটনায় সর্বমোট ৮ হাজার ৫৫০টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে, যার ১৬.১৫ শতাংশ বাস, ২৪.৮৪ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ৫.৯১ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস, ৫.৩৯ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ২৬.০২ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১৪.৪৭ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৭.১৯ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।

 

সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৫২.৮৩ শতাংশ পথচারীকে গাড়ি চাপা, ২০.৫ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৪.২৯ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ১১.৪ শতাংশ বিবিধ কারণে, ০.২৭ শতাংশ যানবাহনের চাকায় ওড়না প্যাঁচিয়ে এবং ০.৬৮ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

 

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এই বছর মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৩৪.৮৬ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২৮.৪১ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৮.৫ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৬.৩২ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১.১১ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে, ০.৬৮ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়েছে।

 

বিগত বছরের চেয়ে বিদায়ী বছরে ছোট যানবাহনের সংখ্যা হঠাৎ কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাওয়া ও এসব যানবাহন অবাধে চলাচলের কারণে ফিডার রোডে ৫৫.১৯ শতাংশ, জাতীয় মহাসড়কে ১৪.৩৩ শতাংশ, রেলক্রসিং-এ ০.১৬ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এবার আঞ্চলিক মহাসড়কে ৪৯.৩৩ শতাংশ দুর্ঘটনা কমেছে।

 

২০২৩ সালে ঢাকা বিভাগে ১ হাজার ৭৩৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৭১২ জন নিহত ও ২ হাজার ৩৮১ জন আহত হয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ২৩৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১ হাজার ২০৫ জন নিহত ও ২ হাজার ২৯৪ জন আহত হয়েছে। খুলনা বিভাগে ৭৬৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭৬৪ জন নিহত ও ১০৭৮ জন আহত হয়েছে। বরিশাল বিভাগে ৩৮১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৭৯ জন নিহত ও ৯৯২ জন আহত হয়েছে। ময়মনসিংহ বিভাগে ৪১৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৬৪ জন নিহত ও ৬৬৫ জন আহত হয়েছে। সিলেট বিভাগে ৩৭১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৩ জন নিহত ও ৯২৬ জন আহত হয়েছে। রংপুর বিভাগে ৫৬৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬২৬ জন নিহত ও ৮৬৮ জন আহত হয়েছে। রাজশাহী বিভাগে ৭৮৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭৯৩ জন নিহত ও ১ হাজার ১৬৮ জন আহত হয়েছে।

 

দুর্ঘটনার কারণ : বেপরোয়া গতি, বিপজ্জনক অভারটেকিং, রাস্তাঘাটের নির্মাণ ত্রুটি, ফিটনেসবিহীন যানবাহনের অবাধে চলাচল, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চালকের অদক্ষতা, যানবাহন চালক ও মালিকের বেপরোয়া মনোভাব, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেডফোন ব্যবহার, মাদক সেবন করে যানবাহন চালানো, রেলক্রসিং ও মহাসড়কে হঠাৎ ফিডার রোড থেকে যানবাহন উঠে আসা, রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকা, ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ, ট্রাফিক আইন অমান্য করা, ছোট যানবাহনের ব্যাপক বৃদ্ধি, সড়কে চাঁদাবাজি, রাস্তার উপর হাট-বাজার, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন চালানো, চালকের নিয়োগ ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকাকে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে তুলে ধরেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

 

সুপারিশ : দুর্ঘটনা রোধে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

 

১. সরকারের প্রথম অগ্রাধিকার প্রকল্পে সড়ক নিরাপত্তার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা।

২. নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দ্রুত সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা।

৩. সড়ক নিরাপত্তায় বাজেট বাড়ানো, সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে সড়ক নিরাপত্তা ইউনিট শক্তিশালী করা।

৪. দেশের সড়ক–মহাসড়কে রোড সাইন, ট্রাফিক চিহ্ন স্থাপন করা। জেব্রা ক্রসিং ও আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা।

৫. চালকদের পেশাদার ট্রেনিং ও নৈতিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা।

৬. অনিয়ম–দুর্নীতি ও চাঁদাবাজি বন্ধ করা; গাড়ির নিবন্ধন, ফিটনেস ও চালকদের লাইসেন্স প্রদানের পদ্ধতি আধুনিকায়ন করা।

৭. সড়ক দুর্ঘটনায় আর্থিক সহায়তা তহবিলে আবেদনের সময়সীমা ৬ মাস নির্ধারণ করা।

৮. দেশব্যাপী পর্যাপ্ত মানসম্মত নতুন বাস সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নেওয়া।

৯. ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণের জন্য ট্রাফিক ট্রেনিং একাডেমি গড়ে তোলা।

১০. মহাসড়কের রোড ডিভাইডার পর্যাপ্ত উঁচু করা।