জুনে শেয়ারবাজারে এক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন
- আপডেটঃ ০৩:৫৫:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ জুলাই ২০২৪
- / ৫৫৭ বার পঠিত
দেশের শেয়ারবাজারে চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে সূচক ও লেনদেনের ঊর্ধ্বমুখিতা দেখা গিয়েছিল। এর পর থেকে শেয়ারবাজারে দরপতন পরিলক্ষিত হয়েছে। সর্বশেষ জুনে এক বছরের মধ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) দৈনিক গড় লেনদেন সর্বনিম্ন হয়েছে। তবে আলোচ্য মাসে ডিএসইর সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স ৭৬ পয়েন্ট বেড়েছে। মূলত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে করারোপের ঘোষণায় শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ইবিএল সিকিউরিটিজের মাসিক শেয়ারবাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত মে শেষে ডিএসইএক্স সূচক ছিল ৫ হাজার ২৫২ পয়েন্টে। জুন শেষে সূচকটি ৭৬ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে ৫ হাজার ৩২৮ পয়েন্টে এসে দাঁড়িয়েছে। সদ্য সমাপ্ত জুনে শেয়ারবাজারে দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার, যা এক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। ডিএসইতে গত বছরের জুনে দৈনিক গড় লেনদেন ৭ কোটি ৬০ লাখ, জুলাইয়ে ৭ কোটি ২০ লাখ, আগস্টে ৪ কোটি, সেপ্টেম্বরে ৫ কোটি ৭০ লাখ, অক্টোবরে ৪ কোটি ২০ লাখ, নভেম্বরে ৩ কোটি ৯০ লাখ, ডিসেম্বরে ৪ কোটি ৯০ লাখ এবং এ বছরের জানুয়ারিতে ৬ কোটি ৫০ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ১১ কোটি ৫০ লাখ, মার্চে ৫ কোটি ৪০ লাখ, এপ্রিলে ৪ কোটি ৭০ লাখ ও মে মাসে ৫ কোটি ৭০ লাখ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
জুনে শেয়ারবাজারের বাজার মূলধন বেড়েছে ১০৬ কোটি ডলার। গত এপ্রিলে বাজার মূলধন ছিল ৫ হাজার ৫০৫ কোটি ডলার, যা মে মাসে ৫ হাজার ৬১২ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। গত মাসে জিডিপি ও বাজার মূলধনের অনুপাত দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ২ শতাংশ। বর্তমানে দেশের শেয়ারবাজারের মূল্য-আয় অনুপাত (পিই রেশিও) ১৫ দশমিক ১৩।
বিশ্বের অন্যান্য প্রধান শেয়ারবাজারের মধ্যে গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র, তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলংকার পারফরম্যান্স ছিল ঊর্ধ্বমুখী। এ সময়ে যুক্তরাজ্য, চীন, হংকং, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইনে শেয়ারবাজার ছিল নিম্নমুখী। এর মধ্যে পারফরম্যান্সের দিক দিয়ে হংকংয়ের শেয়ারবাজার ছিল সবচেয়ে পিছিয়ে।
বাজার পরিস্থিতি, গতকাল দেশের দুই শেয়ারবাজারেই সূচকের নিম্নমুখিতায় লেনদেন শেষ হয়েছে। এর মধ্যে ডিএসইএক্স সূচক কমেছে ২৭ পয়েন্ট এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সিএএসপিআই সূচক কমেছে ২২ পয়েন্ট। তবে গতকাল দুই এক্সচেঞ্জেই লেনদেন বেড়েছে।
ডিএসইতে গতকাল ৭১২ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৭০৬ কোটি টাকা। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ৩৯৮টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৯২টির, কমেছে ২৬৮টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৩৮টির বাজারদর। গতকাল সূচকের পতনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস, ব্র্যাক ব্যাংক, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, প্রাইম ব্যাংক ও পূবালী ব্যাংকের শেয়ারের।
খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ২৮ দশমিক ৩ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে ছিল জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১১ দশমিক ২ শতাংশ দখলে ছিল খাদ্য খাতের। ১০ দশমিক ৭ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে ছিল ওষুধ খাত। মোট লেনদেনের ৭ দশমিক ৮ শতাংশের ভিত্তিতে চতুর্থ অবস্থানে ছিল সাধারণ বীমা খাত। আর বস্ত্র খাতের দখলে ছিল লেনদেনের ৬ দশমিক ১ শতাংশ। গতকাল ডিএসইতে সেবা, টেলিকম ও জ্বালানি খাতের শেয়ারে সর্বোচ্চ ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। অন্যদিকে নেতিবাচক রিটার্নে শীর্ষে ছিল ভ্রমণ, পাট ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাত।
দেশের আরেক শেয়ারবাজার সিএসইতে গতকাল ৬২৪ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে, এর আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১১৬ কোটি টাকা। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ২৩৩টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৬৩টির, কমেছে ১৩৬টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৩৪টির বাজারদর।