ঢাকা , বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে হাসিনার বক্তব্যে সমর্থন করে না ভারত: বিক্রম মিশ্রি

অনলাইন নিউজ ডেস্ক
  • আপডেটঃ ০৪:৪২:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ৫১২ বার পঠিত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো বক্তব্যকেই ভারত সমর্থন করে না বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি।

 

আজ বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কেবল একটি একক রাজনৈতিক দল বা সরকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বলেও জানিয়েছেন বিক্রম মিশ্রি।

 

দুই দেশের সম্পর্কের সাম্প্রতিক টানাপোড়েনের মধ্যেই সম্প্রতি ঢাকা ঘুরে গেছেন বিক্রম মিশ্রি। অংশ নেন বৈঠকেও। এ নিয়ে গতকাল বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য (এমপি) শশী থারুর নেতৃত্বাধীন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সামনে ব্রিফ করেন তিনি। সেখানই ওইসব কথা জানান বিক্রম মিশ্রি।

 

বিক্রম মিশ্রি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক একটি একক রাজনৈতিক দল বা সরকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। ভারত বাংলাদেশের জনগণের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে শেখ হাসিনার সমালোচনা করার বিষয়টি ভারত সমর্থন করে না।

 

গত ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সেখানেই আছেন তিনি। মাঝে–মধ্যে কিছু অডিও ছড়িয়ে পড়ে শেখ হাসিনার নামে। এ ঘটনায় এরই মধ্যে আদালত তাঁর উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

 

ভারত থেকে দেওয়া শেখ হাসিনার বক্তব্য নিয়ে ব্রিফিংয়ে দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বলেন, শেখ হাসিনা ব্যক্তিগত যোগাযোগের যন্ত্র ব্যবহার করে বক্তব্য দেন। ভারত সরকার তাঁকে এমন কোনো প্ল্যাটফর্ম বা সুবিধা প্রদানের সঙ্গে জড়িত না; যা তাঁকে ভারতের মাটি থেকে তাঁর রাজনৈতিক কার্যকলাপ চালাতে দেয়। এটি তৃতীয় দেশে হস্তক্ষেপ এড়ানোর ভারতের ঐতিহ্যবাহী অনুশীলনের অংশ।

 

তিনি জানান, গত সোমবার ঢাকা সফরের সময় তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল বা একটি নির্দিষ্ট সরকারের বাইরে। ভারত বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দেয়। বর্তমান সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক থাকবে।

 

বিক্রম মিশ্রি বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ায় বাণিজ্য ও যোগাযোগের বৃহত্তম অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই পক্ষ রেল যোগাযোগ, বাস সংযোগ, অভ্যন্তরীণ নৌপথ নির্মাণ করেছে।

 

তিনি জানান, ভারত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগ নিয়ে অস্বীকৃতির বিষয়ে উদ্বিগ্ন। তবে হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতার সাথে সম্পর্কিত 88 জনকে গ্রেপ্তার করেছে, এ বিষয়টিকে স্বাগত জানায়।

 

বাংলাদেশে ইসকন সদস্যেদর গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে অবশ্য বিক্রম মিশ্রি কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি বলেন, গত বছর বাংলাদেশ থেকে ১৬ লাখের মতো ভিসা ইস্যু করা হয়। ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে ‘পারস্পরিক সম্পর্ক’ হিসেবে দেখে না, বরং ‘ভালো প্রতিবেশী সম্পর্কের’ ভিত্তি হিসেবে দেখে।

অর্থআদালতডটকম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া অন্য কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।

error: Content is protected !!

অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে হাসিনার বক্তব্যে সমর্থন করে না ভারত: বিক্রম মিশ্রি

আপডেটঃ ০৪:৪২:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো বক্তব্যকেই ভারত সমর্থন করে না বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি।

 

আজ বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কেবল একটি একক রাজনৈতিক দল বা সরকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বলেও জানিয়েছেন বিক্রম মিশ্রি।

 

দুই দেশের সম্পর্কের সাম্প্রতিক টানাপোড়েনের মধ্যেই সম্প্রতি ঢাকা ঘুরে গেছেন বিক্রম মিশ্রি। অংশ নেন বৈঠকেও। এ নিয়ে গতকাল বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য (এমপি) শশী থারুর নেতৃত্বাধীন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সামনে ব্রিফ করেন তিনি। সেখানই ওইসব কথা জানান বিক্রম মিশ্রি।

 

বিক্রম মিশ্রি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক একটি একক রাজনৈতিক দল বা সরকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। ভারত বাংলাদেশের জনগণের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে শেখ হাসিনার সমালোচনা করার বিষয়টি ভারত সমর্থন করে না।

 

গত ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সেখানেই আছেন তিনি। মাঝে–মধ্যে কিছু অডিও ছড়িয়ে পড়ে শেখ হাসিনার নামে। এ ঘটনায় এরই মধ্যে আদালত তাঁর উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

 

ভারত থেকে দেওয়া শেখ হাসিনার বক্তব্য নিয়ে ব্রিফিংয়ে দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বলেন, শেখ হাসিনা ব্যক্তিগত যোগাযোগের যন্ত্র ব্যবহার করে বক্তব্য দেন। ভারত সরকার তাঁকে এমন কোনো প্ল্যাটফর্ম বা সুবিধা প্রদানের সঙ্গে জড়িত না; যা তাঁকে ভারতের মাটি থেকে তাঁর রাজনৈতিক কার্যকলাপ চালাতে দেয়। এটি তৃতীয় দেশে হস্তক্ষেপ এড়ানোর ভারতের ঐতিহ্যবাহী অনুশীলনের অংশ।

 

তিনি জানান, গত সোমবার ঢাকা সফরের সময় তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল বা একটি নির্দিষ্ট সরকারের বাইরে। ভারত বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দেয়। বর্তমান সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক থাকবে।

 

বিক্রম মিশ্রি বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ায় বাণিজ্য ও যোগাযোগের বৃহত্তম অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই পক্ষ রেল যোগাযোগ, বাস সংযোগ, অভ্যন্তরীণ নৌপথ নির্মাণ করেছে।

 

তিনি জানান, ভারত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগ নিয়ে অস্বীকৃতির বিষয়ে উদ্বিগ্ন। তবে হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতার সাথে সম্পর্কিত 88 জনকে গ্রেপ্তার করেছে, এ বিষয়টিকে স্বাগত জানায়।

 

বাংলাদেশে ইসকন সদস্যেদর গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে অবশ্য বিক্রম মিশ্রি কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি বলেন, গত বছর বাংলাদেশ থেকে ১৬ লাখের মতো ভিসা ইস্যু করা হয়। ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে ‘পারস্পরিক সম্পর্ক’ হিসেবে দেখে না, বরং ‘ভালো প্রতিবেশী সম্পর্কের’ ভিত্তি হিসেবে দেখে।