বিএনপি’র ওয়ার্ড কমিটিতে নির্যাতিত-ত্যাগীরা মাইনাসঃ আওয়ামী-ছাত্রলীগের পুনর্বাসন

- আপডেটঃ ০৩:১০:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৫৫৭ বার পঠিত
বাগেরহাটে বিএনপি’র কমিটি গঠনের জন্য ওয়ার্ড পর্যায় হতে জেলা পর্যায় পর্যন্ত কাউন্সিল করে বিএনপি’র সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটে কমিটির সদস্য নির্বাচন করার জন্য ওয়ার্ড পর্যায় হতে সদস্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। কিন্তু সদস্য সংগ্রহে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
বিগত ১৬ বছরের হামলা-মামলায় নির্যাতিত-ত্যাগীদের বাদ দিয়ে বিএনপির ওয়ার্ড কমিটির সদস্য সংগ্রহের অভিযোগ উঠেছে বাগেরহাটের বিভিন্ন ইউনিয়নে। বাগেরহাট সদরের ডেমা ইউনিয়নের বিএনপির আহবায়ক (সাবেক ইউনিয়ন সভাপতি) গাজী আবুবকর সিদ্দিক গত ০৪ জানুয়ারি শনিবার কমিটি জালিয়াতির অভিযোগে জেলা বিএনপি অফিসের সামনে নেতা-কর্মীদের নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। তাদের অভিযোগ এলাকার চিহ্নিত আওয়ামী সন্ত্রাসী, দোসরদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। ওয়ার্ড বিএনপি’র সদস্য করা হচ্ছে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও ঘের লুটপাট কারী চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের।
ডেমা ইউনিয়নের বড়বাঁশবাড়িয়া ওয়ার্ডের সদস্য কমিটিতে বাদ পড়া মোঃ কাওছার হোসেন (জুয়েল) বলেন “বিগত আওয়ামীলীগ আমলে আমাদের ঘের দখল-লুট করেছে আওয়ামীলীগ-ছাত্রলীগের নেতারা, আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদের নামে মামলা হয়েছে, আমার চাচাতো ভাই নাশকতা মামালায় ৯ বছর বাড়িছাড়া ছিল, আর এখন কমিটির সদস্য হিসেবে আমাদের কারো নাম তো নাই! এমনকি এলাকার বিএনপি’র নির্যাতিত অনেক লোকেরও নাম নাই। এতদিন যারা আওয়ামীলীগের হাতে নির্যাতিত হয়েছে তাদের বাদ দিয়ে সদস্য করা হচ্ছে সুযোগসন্ধানী-সুবিধাবাদী, ঘেরলুটপাট কারী, সন্ত্রাসীদের। যারা বিগত আওয়ামীলীগ আমলে এলাকায় ছিল না, দলের সদস্যদের সাথে কোন যোগাযোগ ছিল না তারাই এখন বড় নেতা দাবীদার! ”
একই ইউনিয়নের মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন”এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী, ঘেরলুটকারী, সুলতান হাওলাদার-শহীদ শেখ গং এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে, এখনও ইউনিয়নের পতিত আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর শেখের সাথে মিলে আড়াইবাকি ঘের লুট করে খাচ্ছে, ছাগল চুরি, পানি সেচের মেশিন চুরি সহ নানাবিধ অপকর্ম করে যাচ্ছে। জাল টাকা সহ ধরা পড়ে আগে জেল খেটেছে জাল টাকা ও মাদক ব্যবসায়ী শহীদ শেখ । এই সুলতান হাওলাদার-শহীদ শেখ গং বিগত ২৯ ডিসেম্বর রবিবার বিএনপি’র দলীয় মিটিং থেকে ফেরার সময় আমার উপর সন্ত্রাসী হামলা করে যার অভিযোগ সদর থানায় করা হয়েছে। একালায় বিএনপি’র ওয়ার্ড কমিটির সদস্য করা হচ্ছে আওয়ামীলীগ-ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের যার সাথে এই সুলতান হাওলাদার-শহীদ শেখ গং জড়িত রয়েছে।
রফিকুল আরও অভিযোগ করেন উক্ত সুলতান হাওলাদার-শহীদ শেখ গং বাগেরহাটের ২৪এর বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের শহীদ আলিম হোসেন সিয়াম এর পরিবারের ঘের দখল-লুট ও হামলা করেছে, সিয়াম পরিবারের পক্ষ থেকে সদর থানায় ইতোমধ্যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া উক্ত সুলতান হাওলাদার-শহীদ শেখ গং দের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে বাগেরহাট সেনা ক্যাম্পে একাধিক ঘের লুটপাটের অভিযোগ এবং থানায় ঘের লুট, ছাগল চুরি, সেচের মেশিন চুরি সহ ৫-৭ টি অভিযোগ রয়েছে ”
এই অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য শহীদ শেখের মোবাইলে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায় এবং সুলতান হাওলাদার কল রিসিভ করেন নাই। বাগেরহাট সদর থানার ওসি মোঃ সাইদুর রহমান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি আলিম হোসেন সিয়াম পরিবারের উপর হামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন এবং হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগে বিভিন্ন জায়গায় বিগত ১৬ বছরের নির্যাতিত ত্যাগী নেতা-কর্মীগণ বিক্ষোভ-সংবাদ সম্মেলন সহ দলীয় সমন্বয়কের নিকট অভিযোগ জানাচ্ছেন। চিতলমারি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বিএনপির ওয়ার্ড কমিটিতে আওয়ামী-ছত্রলীগের লোকজনকে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন এডভোকেট শিকদার ইমরান হোসেন। মংলা’র বুড়িরডাঙ্গা এলাকার নির্যাতিত ত্যাগী নেতা শেখ জুলফিকার আলী সংবাদ সম্মেলন করে ওয়ার্ড কমিটি বর্জন করেন।