ঢাকা , বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফেব্রুয়ারির মধ্যেই ডাকসু নির্বাচন দেওয়ার পরিকল্পনা প্রশাসনের

অনলাইন নিউজ ডেস্ক
  • আপডেটঃ ০৫:৩১:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ৫১৭ বার পঠিত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে আয়োজনের পরিকল্পনা করছে প্রশাসন। জানুয়ারির মধ্যেই রোডম্যাপ দেয়ার প্রস্তুতিও নেয়া হচ্ছে। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্রশিবির ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভোট চাইলেও এতে এক মত নয় ছাত্রদল ও ছাত্র ইউনিয়ন। সংস্কার শেষে স্থিতিশীল পরিবেশে নির্বাচনের দাবি এ দুটি ছাত্র সংগঠনের।

 

গতকাল সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

 

তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারির মধ্যেই ভোট আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে গঠনতন্ত্র সংস্কার না করে ডাকসু নির্বাচন কার্যকরি হবে না। এজন্য ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংস্কারের জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ অবস্থায় বিষয়টি নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রশিবির, ছাত্রদল ও ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এই প্রতিবেদক।

 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, আমরা নতুন করে ক্ষমতার রাজনীতি চাই না। আমরা চাই, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ কেন্দ্রিক রাজনীতি শক্তিশালী হোক।

 

ঢাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, দ্রুত সময়ে নির্বাচন চাই। আর দ্রুত সময়ের মধ্যে অন্তত রোডম্যাপটা চাই। সংস্কার এবং ডাকসু নির্বাচনের প্রক্রিয়া একইসঙ্গে চলতে পারে বলে মনে করি।

 

ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র সাহস বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসররা নামে-বেনামে এখনও হল পর্যায়ে রয়ে গেছে। এর ভিত্তিতে দ্রুত ডাকসু নির্বাচন দেওয়া জরুরি।

 

ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা বলেন, তৎকালীন প্রশাসন ছাত্রলীগকে সুবিধা করে দেওয়ার জন্য গঠনতন্ত্রে যে ধরনের বিধান সংযুক্ত করেছিল। সেই গঠনতন্ত্রের অধীনে ডাকসু নির্বাচন হলে সেটা প্রশ্নবিদ্ধ থেকে যাবে।

 

এর আগে, গত ৩ জানুয়ারি সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে বিবিএ প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আমরা অত্যন্ত আগ্রহী। আমরা চাই, সবার মধ্যে এ নির্বাচন নিয়ে ঐক্য তৈরি হোক। সবার মধ্যে এ ব্যাপারে যেন চুক্তি বা সমঝোতার মতো কিছু হয়।

 

তিনি আরও বলেন, আমরা সবাইকে নিয়েই একটা উৎসবমুখর পরিবেশে এই নির্বাচন আয়োজন করতে চাচ্ছি। দীর্ঘদিন পর বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

 

ঢাবি উপাচার্য বলেন, আমরা এই পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে যত দ্রুত সম্ভব সবাইকে নিয়ে নির্বাচন সম্পন্ন করতে চাই। এক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা কাম্য।

 

প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ২৮ বছরের ব্যবধানে ডাকসুর সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৯ সালের মার্চ মাসে। সেই সংসদের মেয়াদ শেষ হয় ২০২০ সালের মার্চে। সেবারের নির্বাচনের আগেও ডাকসুর নীতিমালা সংস্কার, সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি, ছাত্রনেতাদের কারও কারও ছাত্রত্বসংক্রান্ত জটিলতার বিষয়ে নানা সংস্কারের দাবি উঠেছিল। তবে কোনো রকম সংস্কার ছাড়াই একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল সেবার। তারপর আবার বন্ধ হয়ে যায় ডাকসু নির্বাচন। তখন থেকে বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীরা দাবি জানালেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আর নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়নি।

অর্থআদালতডটকম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া অন্য কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।

error: Content is protected !!

ফেব্রুয়ারির মধ্যেই ডাকসু নির্বাচন দেওয়ার পরিকল্পনা প্রশাসনের

আপডেটঃ ০৫:৩১:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে আয়োজনের পরিকল্পনা করছে প্রশাসন। জানুয়ারির মধ্যেই রোডম্যাপ দেয়ার প্রস্তুতিও নেয়া হচ্ছে। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্রশিবির ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভোট চাইলেও এতে এক মত নয় ছাত্রদল ও ছাত্র ইউনিয়ন। সংস্কার শেষে স্থিতিশীল পরিবেশে নির্বাচনের দাবি এ দুটি ছাত্র সংগঠনের।

 

গতকাল সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

 

তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারির মধ্যেই ভোট আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে গঠনতন্ত্র সংস্কার না করে ডাকসু নির্বাচন কার্যকরি হবে না। এজন্য ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংস্কারের জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ অবস্থায় বিষয়টি নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রশিবির, ছাত্রদল ও ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এই প্রতিবেদক।

 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, আমরা নতুন করে ক্ষমতার রাজনীতি চাই না। আমরা চাই, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ কেন্দ্রিক রাজনীতি শক্তিশালী হোক।

 

ঢাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, দ্রুত সময়ে নির্বাচন চাই। আর দ্রুত সময়ের মধ্যে অন্তত রোডম্যাপটা চাই। সংস্কার এবং ডাকসু নির্বাচনের প্রক্রিয়া একইসঙ্গে চলতে পারে বলে মনে করি।

 

ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র সাহস বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসররা নামে-বেনামে এখনও হল পর্যায়ে রয়ে গেছে। এর ভিত্তিতে দ্রুত ডাকসু নির্বাচন দেওয়া জরুরি।

 

ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা বলেন, তৎকালীন প্রশাসন ছাত্রলীগকে সুবিধা করে দেওয়ার জন্য গঠনতন্ত্রে যে ধরনের বিধান সংযুক্ত করেছিল। সেই গঠনতন্ত্রের অধীনে ডাকসু নির্বাচন হলে সেটা প্রশ্নবিদ্ধ থেকে যাবে।

 

এর আগে, গত ৩ জানুয়ারি সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে বিবিএ প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আমরা অত্যন্ত আগ্রহী। আমরা চাই, সবার মধ্যে এ নির্বাচন নিয়ে ঐক্য তৈরি হোক। সবার মধ্যে এ ব্যাপারে যেন চুক্তি বা সমঝোতার মতো কিছু হয়।

 

তিনি আরও বলেন, আমরা সবাইকে নিয়েই একটা উৎসবমুখর পরিবেশে এই নির্বাচন আয়োজন করতে চাচ্ছি। দীর্ঘদিন পর বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

 

ঢাবি উপাচার্য বলেন, আমরা এই পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে যত দ্রুত সম্ভব সবাইকে নিয়ে নির্বাচন সম্পন্ন করতে চাই। এক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা কাম্য।

 

প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ২৮ বছরের ব্যবধানে ডাকসুর সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৯ সালের মার্চ মাসে। সেই সংসদের মেয়াদ শেষ হয় ২০২০ সালের মার্চে। সেবারের নির্বাচনের আগেও ডাকসুর নীতিমালা সংস্কার, সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি, ছাত্রনেতাদের কারও কারও ছাত্রত্বসংক্রান্ত জটিলতার বিষয়ে নানা সংস্কারের দাবি উঠেছিল। তবে কোনো রকম সংস্কার ছাড়াই একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল সেবার। তারপর আবার বন্ধ হয়ে যায় ডাকসু নির্বাচন। তখন থেকে বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীরা দাবি জানালেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আর নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়নি।