ঢাকা , সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ই-সিগারেট কতটা ক্ষতিকর, জেনে নিন

অনলাইন নিউজ ডেস্ক
  • আপডেটঃ ০১:১৯:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৫৯৫ বার পঠিত

ইলেকট্রনিক সিগারেট বা ই-সিগারেট ব্যাটারি চালিত এক ধরনের যন্ত্র। তো এই জিনিস দিয়ে কী হয়? যারা ধূমপান ছেড়ে দিতে চান তারা দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতেই এই ই-সিগারেট পান করেন। কি থাকে এই ই-সিগারেটের ভেতর?

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণ সিগারেটের চেয়ে ক্ষতি কম এমন ভুল বার্তা প্রচার করে তরুণদের আসক্ত করে তোলা হচ্ছে ই-সিগারেটে, যা পরবর্তীকালে অন্যান্য মাদকের প্রতি আসক্তির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। শুধু তাই নয়, ই-সিগারেটে ক্যান্সার উৎপাদনকারী রাসায়নিক, ফরমাল ডিহাইড এবং এসিটেল ডিহাইডের অস্তিত্ব আছে।

 

বর্তমান সময়ে তরুণদের ই-সিগারেট গ্রহণের প্রবণতা বাড়ছে ব্যাপক হারে। অনেকে সাধারণ সিগারেটের বিপরীতে হাতে তুলে নিয়েছেন ভ্যাপ। তাদের দাবি, সাধারণ সিগারেটের চেয়ে ক্ষতি কম ই-সিগারেটে। বেঁচে যায় খরচও। এমন এক থেকে দুটি যুক্তিই অনেককে ই-সিগারেট হাতে তুলে নিতে উৎসাহ যোগাচ্ছে। কিন্তু আসলেই কি তাই?

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রপেলিন গ্লাইসল, গ্লিসারিন, পলিইথিলিন গ্লাইসল, নানাবিধ ফ্লেভার ও নিকোটিনে সমৃদ্ধ ই-সিগারেটের ধোঁয়ায় থাকে অতি সূক্ষ্ম রাসায়নিক কণা, যা ভীষণ ক্ষতিকর। ই-সিগারেটে অস্তিত্ব আছে ক্যান্সার উৎপাদনকারী রাসায়নিক, ফরমাল ডিহাইড এবং এসিটেল ডিহাইডেরও। ই-সিগারেটের রাসায়নিক নিকোটিনের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার হতে পারে মৃত্যুর কারণও।ডিভাইস নির্ভর ই-সিগারেটও নিকোটিন নির্ভর। আর তাই বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, এটি ব্যবহারে স্ট্রোকের ঝুঁকি ৭১ শতাংশ, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ৫৯ শতাংশ বাড়িয়ে দিতে পারে। এছাড়া জাপানে পরিচালিত এক গবেষেণায় দেখা গেছে, ই-সিগারেট সাধারণ সিগারেটের থেকেও ১০ গুণ বেশি ক্ষতিকর।

 

মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থার (মানস) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ডা. অরূপ রতন চৌধুরী সময় সংবাদকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন,  শুধু সাধারণ সিগারেট ছাড়ার উদ্দেশ্যেই নয়, উঠতি বয়সি অনেক তরুণ-তরুণী ফ্যাশনের অংশ হিসেবেও ঝুঁকে পড়ছেন ই-সিগারেটে, যা এক সময় তাদের টেনে নিচ্ছে সাধারণ সিগারেট এমনকি মাদকের জগতে। ই-সিগারেটের সম্ভাব্য ক্ষতির দিক বিবেচনায় এরই মধ্যে আর্জেন্টেনা, ব্রাজিল, কম্বোডিয়া, মালোয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং ভারতসহ বিশ্বের অন্তত ৪৭টি দেশ নিষিদ্ধ করেছে ই-সিগারেট। এমন বাস্তবতায় বাংলাদেশেরও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের সময় এসেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

এ বিষয়ে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের রোগতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ২০৪০ সালের মধ্যে মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে এখনই লাগাম টানতে হবে ই-সিগারেটে।

অর্থআদালতডটকম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া অন্য কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।

error: Content is protected !!

ই-সিগারেট কতটা ক্ষতিকর, জেনে নিন

আপডেটঃ ০১:১৯:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

ইলেকট্রনিক সিগারেট বা ই-সিগারেট ব্যাটারি চালিত এক ধরনের যন্ত্র। তো এই জিনিস দিয়ে কী হয়? যারা ধূমপান ছেড়ে দিতে চান তারা দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতেই এই ই-সিগারেট পান করেন। কি থাকে এই ই-সিগারেটের ভেতর?

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণ সিগারেটের চেয়ে ক্ষতি কম এমন ভুল বার্তা প্রচার করে তরুণদের আসক্ত করে তোলা হচ্ছে ই-সিগারেটে, যা পরবর্তীকালে অন্যান্য মাদকের প্রতি আসক্তির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। শুধু তাই নয়, ই-সিগারেটে ক্যান্সার উৎপাদনকারী রাসায়নিক, ফরমাল ডিহাইড এবং এসিটেল ডিহাইডের অস্তিত্ব আছে।

 

বর্তমান সময়ে তরুণদের ই-সিগারেট গ্রহণের প্রবণতা বাড়ছে ব্যাপক হারে। অনেকে সাধারণ সিগারেটের বিপরীতে হাতে তুলে নিয়েছেন ভ্যাপ। তাদের দাবি, সাধারণ সিগারেটের চেয়ে ক্ষতি কম ই-সিগারেটে। বেঁচে যায় খরচও। এমন এক থেকে দুটি যুক্তিই অনেককে ই-সিগারেট হাতে তুলে নিতে উৎসাহ যোগাচ্ছে। কিন্তু আসলেই কি তাই?

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রপেলিন গ্লাইসল, গ্লিসারিন, পলিইথিলিন গ্লাইসল, নানাবিধ ফ্লেভার ও নিকোটিনে সমৃদ্ধ ই-সিগারেটের ধোঁয়ায় থাকে অতি সূক্ষ্ম রাসায়নিক কণা, যা ভীষণ ক্ষতিকর। ই-সিগারেটে অস্তিত্ব আছে ক্যান্সার উৎপাদনকারী রাসায়নিক, ফরমাল ডিহাইড এবং এসিটেল ডিহাইডেরও। ই-সিগারেটের রাসায়নিক নিকোটিনের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার হতে পারে মৃত্যুর কারণও।ডিভাইস নির্ভর ই-সিগারেটও নিকোটিন নির্ভর। আর তাই বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, এটি ব্যবহারে স্ট্রোকের ঝুঁকি ৭১ শতাংশ, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ৫৯ শতাংশ বাড়িয়ে দিতে পারে। এছাড়া জাপানে পরিচালিত এক গবেষেণায় দেখা গেছে, ই-সিগারেট সাধারণ সিগারেটের থেকেও ১০ গুণ বেশি ক্ষতিকর।

 

মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থার (মানস) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ডা. অরূপ রতন চৌধুরী সময় সংবাদকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন,  শুধু সাধারণ সিগারেট ছাড়ার উদ্দেশ্যেই নয়, উঠতি বয়সি অনেক তরুণ-তরুণী ফ্যাশনের অংশ হিসেবেও ঝুঁকে পড়ছেন ই-সিগারেটে, যা এক সময় তাদের টেনে নিচ্ছে সাধারণ সিগারেট এমনকি মাদকের জগতে। ই-সিগারেটের সম্ভাব্য ক্ষতির দিক বিবেচনায় এরই মধ্যে আর্জেন্টেনা, ব্রাজিল, কম্বোডিয়া, মালোয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং ভারতসহ বিশ্বের অন্তত ৪৭টি দেশ নিষিদ্ধ করেছে ই-সিগারেট। এমন বাস্তবতায় বাংলাদেশেরও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের সময় এসেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

এ বিষয়ে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের রোগতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ২০৪০ সালের মধ্যে মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে এখনই লাগাম টানতে হবে ই-সিগারেটে।