ঢাকা , রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এবার গাজীপুরে নার্স দিয়ে সিজারের পর প্রসূতির মৃত্যু

অনলাইন নিউজ ডেস্ক
  • আপডেটঃ ০৫:০৩:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ এপ্রিল ২০২৪
  • / ৫৭৮ বার পঠিত

গাজীপুরের মাওনা চৌরাস্তা এলাকার লাইফ কেয়ার হাসপাতালে ছিলেন না বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। নার্স দিয়েই করানো হয় সিজারিয়ান অপারেশনের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 

গতকাল রোববার (৩১ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টার দিকে গাজীপুরের চৌরাস্তা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

 

ভুক্তভোগী ওই নারীর নাম ইয়াসমিন আক্তার (৩০)। তিনি উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের ইন্দ্রপুর গ্রামের আসাদুল্লাহর স্ত্রী। ঘটনার পর ক্ষুব্ধ হয়ে হাসপাতালে ভাঙচুর চালান রোগীর স্বজনরা। এদিকে, প্রসূতির মৃত্যুর পরপরই হাসপাতালের মালিকপক্ষ, কর্মকর্তা,কর্মচারী ও নার্স পালিয়ে গেছেন। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

 

প্রসূতির মা রাজিয়া আক্তারের অভিযোগ, দুপুর ১২টার দিকে মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করান। তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের জানায়, মাগরিবের নামাজের পরপরই সিজার করা হবে। এই বলে হাসপাতাল থেকে স্বজনদের বিদায় দেয়। শুধু তিনি হাসপাতালের বাইরে অপেক্ষায় ছিলেন।

 

তিনি আরও জানান, বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জানানো হয় তার মেয়ের ছেলে সন্তান হয়েছে। দৌড়ে মেয়ের কাছে গিয়ে দেখেন প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তখন স্বজনদের খবর দিলে তারা হাসপাতালে ছুটে আসেন। কর্তব্যরত নার্সকে অনুরোধ করলেও কোনো গুরুত্ব দেয়া হয়নি। রাত সাড়ে ৯টার দিকে মেয়ের অবস্থার অবনতি হলে তারা রেফার্ডের নাম করে অ্যাম্বুলেন্সে মরদেহ তুলে দিয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান। ইয়াসমিন আক্তারের নবজাতক শিশুপুত্র ও ইকরা নামে ১০ বছর বয়সী মেয়ে রয়েছে বলেও জানান তিনি।

 

এদিকে, নবজাতকের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে পার্শ্ববর্তী আল হেরা হাসপাতালে। আল হেরা হাসপাতালের চিফ অপারেশন ম্যানেজার মুসা কালিমুল্লাহ বলেন, শিশুর চেক আপ হয়েছে। তার অবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে।

 

লাইফ কেয়ার হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মো. পারভেজ হোসেনের ফোন নম্বরে একাধিকবার কল দেয়া হলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। হাসপাতালে গিয়েও কাউকে পাওয়া যায়নি।

 

রাত ১২টার পর শ্রীপুরের নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শোভন রাংসা হাসপাতালে উপস্থিত হন। এসময় তিনি বলেন, হাসপাতালের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

এ বিষয়ে শ্রীপুরের উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা প্রণয় ভূষণ দাস বলেন, প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।এর আগেও এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে একাধিক ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু ও অঙ্গহানির ঘটনা ঘটার অভিযোগ রয়েছে।

অর্থআদালতডটকম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া অন্য কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।

error: Content is protected !!

এবার গাজীপুরে নার্স দিয়ে সিজারের পর প্রসূতির মৃত্যু

আপডেটঃ ০৫:০৩:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ এপ্রিল ২০২৪

গাজীপুরের মাওনা চৌরাস্তা এলাকার লাইফ কেয়ার হাসপাতালে ছিলেন না বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। নার্স দিয়েই করানো হয় সিজারিয়ান অপারেশনের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 

গতকাল রোববার (৩১ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টার দিকে গাজীপুরের চৌরাস্তা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

 

ভুক্তভোগী ওই নারীর নাম ইয়াসমিন আক্তার (৩০)। তিনি উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের ইন্দ্রপুর গ্রামের আসাদুল্লাহর স্ত্রী। ঘটনার পর ক্ষুব্ধ হয়ে হাসপাতালে ভাঙচুর চালান রোগীর স্বজনরা। এদিকে, প্রসূতির মৃত্যুর পরপরই হাসপাতালের মালিকপক্ষ, কর্মকর্তা,কর্মচারী ও নার্স পালিয়ে গেছেন। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

 

প্রসূতির মা রাজিয়া আক্তারের অভিযোগ, দুপুর ১২টার দিকে মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করান। তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের জানায়, মাগরিবের নামাজের পরপরই সিজার করা হবে। এই বলে হাসপাতাল থেকে স্বজনদের বিদায় দেয়। শুধু তিনি হাসপাতালের বাইরে অপেক্ষায় ছিলেন।

 

তিনি আরও জানান, বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জানানো হয় তার মেয়ের ছেলে সন্তান হয়েছে। দৌড়ে মেয়ের কাছে গিয়ে দেখেন প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তখন স্বজনদের খবর দিলে তারা হাসপাতালে ছুটে আসেন। কর্তব্যরত নার্সকে অনুরোধ করলেও কোনো গুরুত্ব দেয়া হয়নি। রাত সাড়ে ৯টার দিকে মেয়ের অবস্থার অবনতি হলে তারা রেফার্ডের নাম করে অ্যাম্বুলেন্সে মরদেহ তুলে দিয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান। ইয়াসমিন আক্তারের নবজাতক শিশুপুত্র ও ইকরা নামে ১০ বছর বয়সী মেয়ে রয়েছে বলেও জানান তিনি।

 

এদিকে, নবজাতকের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে পার্শ্ববর্তী আল হেরা হাসপাতালে। আল হেরা হাসপাতালের চিফ অপারেশন ম্যানেজার মুসা কালিমুল্লাহ বলেন, শিশুর চেক আপ হয়েছে। তার অবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে।

 

লাইফ কেয়ার হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মো. পারভেজ হোসেনের ফোন নম্বরে একাধিকবার কল দেয়া হলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। হাসপাতালে গিয়েও কাউকে পাওয়া যায়নি।

 

রাত ১২টার পর শ্রীপুরের নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শোভন রাংসা হাসপাতালে উপস্থিত হন। এসময় তিনি বলেন, হাসপাতালের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

এ বিষয়ে শ্রীপুরের উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা প্রণয় ভূষণ দাস বলেন, প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।এর আগেও এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে একাধিক ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু ও অঙ্গহানির ঘটনা ঘটার অভিযোগ রয়েছে।