ঢাকা , রবিবার, ১৬ জুন ২০২৪, ২ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তাপপ্রবাহ ও ঘূর্ণিঝড় নিয়ে যা জানাল: আবহাওয়া অফিস

অনলাইন নিউজ ডেস্ক
  • আপডেটঃ ১২:৪৮:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪
  • / ৫৬৩ বার পঠিত

আগামী ৩ দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে তাপপ্রবাহ নিয়ে খারাপ সংবাদ দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এ সময় বায়ুতে জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

 

আজ বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়। এছাড়া দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে পশ্চিমমধ্যা বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরো ঘণীভূত হতে পারে।

 

সংস্থাটি জানায়, শুক্রবার (২৪ মে) সকাল ৯টা পর্যন্ত মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, সিলেট, চট্রগ্রাম, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, বান্দারবান, খুলনা, মংলা, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা, খেপুপাড়া এবং ভোলা জেলাসমূহের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বৃদ্ধি পেতে পারে। চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

 

শনিবার (২৫ মে) সকাল ৯টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।

 

রোববার (২৬ মে) সকাল ৯টা পর্যন্ত খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়াপ্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

 

এদিকে, দক্ষিণ মধ্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট রেমাল নামের ঘূর্ণিঝড়টি আগামীকাল শুক্রবারের পর তার গতিপথ চূড়ান্ত করতে পারে। খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলোতে প্রচণ্ড গতিতে এটি আঘাত হানতে পারে।

 

এ সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার; যা দমকা হাওয়াসহ ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। ঘূর্ণিঝড়টি যদি জোয়ারের সময় উপকূলে আঘাত হানা শুরু করে, তবে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় এলাকাগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ থেকে ১০ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা রয়েছে।

 

ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর মিডিয়াম রেঞ্জ ওয়েদার ফোরকাস্ট (ইসিএমডব্লিউএফ) জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বা শুক্রবারের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণে সুন্দরবনের কাছে ২৬ থেকে ২৭ মে আঘাত হানতে পারে।

 

বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ জানিয়েছেন, ‘বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। লঘুচাপটি আগামীকাল শুক্র বা শনিবার নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। পরে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।’

 

ভারতের আবহাওয়া বিজ্ঞানী এম শর্মা জানিয়েছেন, ‘শনিবার ঘূর্ণিঝড় রিমালে পরিণত হতে পারে। লঘুচাপটির সর্বোচ্চ শক্তি সঞ্চয় করার সম্ভাবনা রয়েছে। কোনো কোনো মডেল বলছে, এটির গতিপথ হতে পারে বাংলাদেশ-মিয়ানমার উপকূলের দিকে। আবার কোনো কোনো মডেল বলছে, পশ্চিমবঙ্গে এটি আছড়ে পড়তে পারে। উপকূলে আসতে আঘাত করবে আগামী ২৬ মের দিকে।’

 

আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘বর্তমান যে প্রেডিকশন, তাতে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ, মিয়ানমার বা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, উড়িষ্যা এই অঞ্চলের দিকেই এর গতিপথ। তবে এর গতিপথ ক্ষণে ক্ষণে পরিবর্তিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার বা শুক্রবারের মধ্যে লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। পরে ২৪ মে রাতে বা ২৫ মে সকালের দিকে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।’

 

তিনি বলেন, ‘প্রতিনিয়ত এটার গতিপথ পরিবর্তিত হচ্ছে, রাতে একটা গতিপথ থাকছে, আবার সকালে আরেকটা হচ্ছে; অর্থাত যতক্ষণ পর্যন্ত না নিম্নচাপে রূপ নেয়, ততক্ষণ পর্যন্ত তার আগের সব গতিপথ পরিবর্তিত হবে। যখন নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে, তখন গতিপথ স্থির হবে। তখন স্পষ্টভাবে বলা যাবে, এটা কোন এলাকায় বা স্থানে আঘাত হানতে পারে।’

অর্থআদালতডটকম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া অন্য কোথাও ব্যবহার করা যাবে না।

error: Content is protected !!

তাপপ্রবাহ ও ঘূর্ণিঝড় নিয়ে যা জানাল: আবহাওয়া অফিস

আপডেটঃ ১২:৪৮:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪

আগামী ৩ দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে তাপপ্রবাহ নিয়ে খারাপ সংবাদ দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এ সময় বায়ুতে জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

 

আজ বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়। এছাড়া দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে পশ্চিমমধ্যা বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরো ঘণীভূত হতে পারে।

 

সংস্থাটি জানায়, শুক্রবার (২৪ মে) সকাল ৯টা পর্যন্ত মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, সিলেট, চট্রগ্রাম, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, বান্দারবান, খুলনা, মংলা, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা, খেপুপাড়া এবং ভোলা জেলাসমূহের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বৃদ্ধি পেতে পারে। চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

 

শনিবার (২৫ মে) সকাল ৯টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।

 

রোববার (২৬ মে) সকাল ৯টা পর্যন্ত খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়াপ্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

 

এদিকে, দক্ষিণ মধ্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট রেমাল নামের ঘূর্ণিঝড়টি আগামীকাল শুক্রবারের পর তার গতিপথ চূড়ান্ত করতে পারে। খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলোতে প্রচণ্ড গতিতে এটি আঘাত হানতে পারে।

 

এ সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার; যা দমকা হাওয়াসহ ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। ঘূর্ণিঝড়টি যদি জোয়ারের সময় উপকূলে আঘাত হানা শুরু করে, তবে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় এলাকাগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ থেকে ১০ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা রয়েছে।

 

ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর মিডিয়াম রেঞ্জ ওয়েদার ফোরকাস্ট (ইসিএমডব্লিউএফ) জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বা শুক্রবারের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণে সুন্দরবনের কাছে ২৬ থেকে ২৭ মে আঘাত হানতে পারে।

 

বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ জানিয়েছেন, ‘বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। লঘুচাপটি আগামীকাল শুক্র বা শনিবার নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। পরে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।’

 

ভারতের আবহাওয়া বিজ্ঞানী এম শর্মা জানিয়েছেন, ‘শনিবার ঘূর্ণিঝড় রিমালে পরিণত হতে পারে। লঘুচাপটির সর্বোচ্চ শক্তি সঞ্চয় করার সম্ভাবনা রয়েছে। কোনো কোনো মডেল বলছে, এটির গতিপথ হতে পারে বাংলাদেশ-মিয়ানমার উপকূলের দিকে। আবার কোনো কোনো মডেল বলছে, পশ্চিমবঙ্গে এটি আছড়ে পড়তে পারে। উপকূলে আসতে আঘাত করবে আগামী ২৬ মের দিকে।’

 

আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘বর্তমান যে প্রেডিকশন, তাতে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ, মিয়ানমার বা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, উড়িষ্যা এই অঞ্চলের দিকেই এর গতিপথ। তবে এর গতিপথ ক্ষণে ক্ষণে পরিবর্তিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার বা শুক্রবারের মধ্যে লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। পরে ২৪ মে রাতে বা ২৫ মে সকালের দিকে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।’

 

তিনি বলেন, ‘প্রতিনিয়ত এটার গতিপথ পরিবর্তিত হচ্ছে, রাতে একটা গতিপথ থাকছে, আবার সকালে আরেকটা হচ্ছে; অর্থাত যতক্ষণ পর্যন্ত না নিম্নচাপে রূপ নেয়, ততক্ষণ পর্যন্ত তার আগের সব গতিপথ পরিবর্তিত হবে। যখন নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে, তখন গতিপথ স্থির হবে। তখন স্পষ্টভাবে বলা যাবে, এটা কোন এলাকায় বা স্থানে আঘাত হানতে পারে।’